Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দ্রুত কথা চাই উধাও শর্তও, রাজ্যের প্রতি বার্তা মোর্চার

গুরুঙ্গ না থাকায় নিত্যনতুন ফতোয়াও বন্ধ। ফলে পাহাড়বাসীর অনেকেই সাহস করে রাস্তায় বেরোচ্ছেন। দোকান খুলছে। বেশ কিছু বাগানে চা শ্রমিকরা চুপিসাড়ে রাজ্য সরকারের দেওয়া রেশনও নিচ্ছেন।

কিশোর সাহা ও প্রতিভা গিরি
শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩৩
Share: Save:

দলনেতা বিমল গুরুঙ্গের দেখা নেই কয়েক দিন ধরে। বিস্ফোরণের পরে তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র একাধিক ধারায় অভিযোগও রুজু হয়েছে। এই অবস্থায় তাঁরা যে আলোচনা নিয়ে রাজ্যের ডাকেরও অপেক্ষায়, সেটা নতুন করে জানিয়ে দিলেন মোর্চার নেতা বিনয় তামাঙ্গ। যে বিবৃতিতে তিনি রাজ্যের প্রতি এই বার্তা দিয়েছেন, সেখানে লক্ষণীয় ভাবে কোনও শর্ত আরোপের কথাও বলেননি।

এ বারের আন্দোলনের শুরুতে গুরুঙ্গ কিছু দিন ‘অদৃশ্য’ ছিলেন। তাঁকে নিয়ে নানা জল্পনাও শুরু হয়েছিল। আন্দোলনের রাশ কিছুটা চলে যায় অন্য দলগুলির হাতে। মোর্চা কর্মীরাও নেতার অবর্তমানে কিছুটা দিশাহারা হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে ফের সংবাদমাধ্যমের একাংশকে ডেকে সাক্ষাৎকার দিয়ে প্রকাশ্যে আসেন গুরুঙ্গ। এই দফায় কিন্তু এখনও তাঁর কোনও হদিস নেই। কারও ধারণা, তিনি দার্জিলিং লাগোয়া সিকিমের কোনও গ্রামে রয়েছেন। কেউ মনে করছেন, গুরুঙ্গ মিরিকের নেপাল সীমান্তবর্তী ইলম আস্তানায়। তাঁর সন্ধানে ড্রোন তল্লাশি চলছে সমানে। দার্জিলিঙের এক শীর্ষ কর্তা জানান, অশান্তির ঘাঁটিগুলিকে চিহ্নিত করতে ড্রোন দিয়ে তল্লাশিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। সেই মতো পদক্ষেপও করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:গাড়ি ছেড়ে বন্যার্তদের পাশে মমতা

গুরুঙ্গ না থাকায় নিত্যনতুন ফতোয়াও বন্ধ। ফলে পাহাড়বাসীর অনেকেই সাহস করে রাস্তায় বেরোচ্ছেন। দোকান খুলছে। বেশ কিছু বাগানে চা শ্রমিকরা চুপিসাড়ে রাজ্য সরকারের দেওয়া রেশনও নিচ্ছেন। স্কুল না খুললেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ পড়ুয়াদের ‘প্রাইভেট’ পড়ানো শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে জিএনএলএফ, জন আন্দোলন পার্টি আপাতত বন্‌ধ শিথিল করে আলোচনার পথে যেতে মরিয়া। ২৪ ঘণ্টা আগে জিএনএলএফ নিঃশর্ত আলোচনার প্রস্তাবও দিয়েছে। এ বার একই ইঙ্গিত মিলল মোর্চার তরফেও। বিনয় তামাঙ্গ এ দিন স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব শুধু বাসিন্দাদের নয়, রাজ্যে এবং কেন্দ্রের উপরেও সমান দায় বর্তায়। দুই সরকারে কাছেই অনুরোধ, দ্রুত আলোচনার ব্যবস্থা হোক। যত দ্রুত পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর ব্যবস্থা হোক।’’ এই বিবৃতি দেখে পাহাড়ের কেউ কেউ বলছেন, বিনয় কিন্তু সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছেন শর্ত আরোপের বিষয়টি। বদলে দুই বিস্ফোরণের থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরি করতেই ব্যস্ত তিনি। বারবার জানান, তাঁরা দেশভক্ত ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী।

পাহাড়ের কয়েক জনের দাবি, এখন বন্‌ধ তুললে পুজোর ভিড় কিছুটা হলেও পাহাড়ে আসতে পারে। তাই সব মহলই চাপ বাড়াচ্ছে। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি বা গোর্খাল্যান্ড দাবি আদায় সমন্বয় কমিটির বৈঠক যাতে দ্রুত বসে, সেই দাবিও উঠেছে। গুরুঙ্গের কাছে সেই বার্তা পৌঁছেছে। কিন্তু, সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনও সাড়া দেননি গুরুঙ্গ। সূত্রের খবর, গুরুঙ্গ গোপন ডেরায় বসে কলকাতা ও দিল্লির আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছেন। দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল বাড়াতে শীঘ্রই বৈঠক হবে বলে গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ কয়েক জন নেতা আশা করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE