Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বাগডোগরায় এ বার সোনা মিলল ডায়াপারে

ব্যাঙ্কক থেকে বায়ুপথে কলকাতায় সোনা পাচার এখন প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবারের পরে বৃহস্পতিবারেও পাচারের পথে বেশ কিছু আটক করা হয়েছে মহানগরের বিমানবন্দরে। তবে পাচারকারীরা বাগডোগরাতেও জাল ছড়ানোয় শুল্ক বিভাগ উদ্বিগ্ন। বুধবার ব্যাঙ্কক থেকে পাচারের সময় প্রচুর সোনা ধরা পড়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দরে।

বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হওয়া সোনার রিং। (ডান দিকে) ডায়াপারে বোতাম লাগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সোনার রিং। — নিজস্ব চিত্র।

বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হওয়া সোনার রিং। (ডান দিকে) ডায়াপারে বোতাম লাগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সোনার রিং। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:৫০
Share: Save:

ব্যাঙ্কক থেকে বায়ুপথে কলকাতায় সোনা পাচার এখন প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবারের পরে বৃহস্পতিবারেও পাচারের পথে বেশ কিছু আটক করা হয়েছে মহানগরের বিমানবন্দরে। তবে পাচারকারীরা বাগডোগরাতেও জাল ছড়ানোয় শুল্ক বিভাগ উদ্বিগ্ন। বুধবার ব্যাঙ্কক থেকে পাচারের সময় প্রচুর সোনা ধরা পড়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দরে।

কলকাতা বিমানবন্দরের সঙ্গে সঙ্গে সোনা পাচারের জন্য বাগডোগরাকেও বেছে নেওয়া হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্নটা শুল্ক বিভাগকেও ভাবাচ্ছে। বুধবার সেখানে যে-ভাবে সোনা পাচারের চেষ্টা চলছিল, সেটাও কিঞ্চিৎ অভিনব। এ বার সোনা লুকোনোর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল শিশুদের ব্যবহার্য বিপুল পরিমাণ ডায়াপার। শুল্ক অফিসারদের অনুমান, ইদানীং কলকাতা বিমানবন্দরে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। নজরদারির সেই কড়াকড়ি এড়াতেই পাচারকারীরা এখন সোনা পাচারের জন্য বাগডোগরার মতো রুট বেছে নিচ্ছে।

ব্যাঙ্কক থেকে সপ্তাহে দু’টি উড়ান আসে বাগডোগরায়। বুধ ও শনিবার ড্রুক এয়ারের ওই বিমান পারো থেকে ব্যাঙ্কক ঘুরে বাগডোগরায় পৌঁছয়। বুধবার সন্ধ্যায় সেই উড়ানেই ব্যাঙ্কক থেকে বাগডোগরায় এসেছিল অমিত বর্মা ও অঙ্কুর সোনি নামে চণ্ডীগড়ের দুই বাসিন্দা। বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর মুখে তল্লাশির সময় তাদের ব্যাগে প্রচুর ডায়াপার দেখে শুল্ক অফিসারদের সন্দেহ হয়। সেই সব ডায়াপার সরিয়ে নিয়ে গিয়ে আলাদা ভাবে তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে পড়ে প্রচুর সোনা।

শিলিগুড়ির শুল্ক কমিশনার বন্দনা দেবারি জানান, বড় ব্যাগে ৮৪টি ডায়াপার ছিল। সেগুলিতে বোতাম লাগিয়ে থলের আকার দেওয়া হয়েছিল। তার ভিতরেই লুকোনো ছিল ছোট ছোট সোনার রিং। এই ধরনের ১৩৪৪টি রিং আটক করা হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন কিলোগ্রাম সোনা। অফিসারেরা জানান, ওই সোনার বাজারদর প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা। সংশ্লিষ্ট দুই যাত্রীকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরার মুখে ধৃতেরা জানায়, আমেরিকা ও সুইৎজারল্যান্ড থেকে সোনা নিয়ে এসে তা গলিয়ে ওই সব রিং তৈরি করা হয়েছে। সোনা গলানোর একটি যন্ত্রও পাওয়া
গিয়েছে ধৃতদের কাছে। এর আগে, জানুয়ারিতে বাগডোগরাতেই ট্রলি ব্যাগের হাতলে ১৭ কিলোগ্রাম সোনা লুকিয়ে পাচার করার সময় ধরা পড়ে গিয়েছিল এক বিমানযাত্রী।

পাচারকারীদের একাংশ এখন বাগডোগরায় সরে গেলেও কলকাতা বিমানবন্দরে সোনা পাচারে ভাটার লক্ষণ নেই। বুধবার ব্যাঙ্কক থেকে তাই এয়ারওয়েজের উড়ানে আসা এক যাত্রী এবং ভুটান এয়ারওয়েজের বিমানে আসা অন্য এক যাত্রীর কাছ থেকে সোনা আটক করা হয়েছিল।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভোরে আবার সোনা ধরা পড়ে ব্যাঙ্কক থেকে আসা ইন্ডিগোর একটি উড়ানে। সন্দেহ হওয়ায় ওই উড়ানের দুই মহিলা যাত্রীকে আটকান শুল্ক অফিসারেরা। দুই মহিলাই হরিয়ানার বাসিন্দা এবং তাঁরা সোনার ঘড়ি ও বালা পরে ছিলেন। দু’জনের কাছ থেকে সব মিলিয়ে ২৬ লক্ষ টাকার সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে দুই মহিলাকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী যাত্রী-পিছু ২০ লক্ষ টাকার কম মূল্যের সোনা পাওয়া গেলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় না। এ ক্ষেত্রে দুই মহিলা মিলিয়ে পাওয়া গিয়েছে ২৬ লক্ষ টাকার সোনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE