Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

উচ্চশিক্ষা বিল নিয়ে প্রশ্ন রাজ্যপালের

কলেজে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিধানসভার অধিবেশনে চলতি নতুন বিল পাশ করিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু নয়া নিয়ম কেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বলবৎ হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৮
Share: Save:

কলেজে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিধানসভার অধিবেশনে চলতি নতুন বিল পাশ করিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু নয়া নিয়ম কেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বলবৎ হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। এ ব্যাপারে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) মতামত চেয়েছেন তিনি।

রাজভবনের বক্তব্য, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক কাঠামোয় কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে — তা সব প্রতিষ্ঠানেই প্রযোজ্য হওয়া উচিত। অথচ সংখ্যালঘু পরিচালিত প্রতিষ্ঠানকে এই বিলের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। কোনও নির্বাচিত সরকার কি এমন আইন করতে পারে — প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল।

রাজভবন সূত্রের খবর, এজি-র মতামত জানার পাশাপাশি কয়েক জন বিশিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলতে পারেন রাজ্যপাল। তিনি নিজে এলাহাবাদ হাইকোর্টের আইনজীবী ছিলেন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার অধ্যক্ষও ছিলেন। তাই সব বিলের প্রতিটি বক্তব্য খুঁটিয়ে দেখছেন। রাজভবনের এক মুখপাত্র জানান, রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক জ্ঞানের পরিধিতে এই বিলে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি সরকারের দুর্বলতা দেখেছেন। সেই কারণেই এজি-র মতামত চেয়েছেন। তা আসার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন তিনি।

আইনজীবী মহলের একাংশ অবশ্য বিলের মধ্যে কোনও গলদ দেখছেন না। আইনজীবী এক্রামুল বারির কথায়, ‘‘সংবিধানের ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলি নিজেদের নিয়মে চলবে। তাদের উপর সরকারের সাধারণ নিয়ম বলবৎ হবে না। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির নিজস্বতা বজায় রাখার জন্যই এই রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করেছে সংবিধান। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ও রয়েছে।’’ এই রক্ষাকবচের কারণে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি স্কুল বা কলেজ সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক নিয়োগ করতে বাধ্য নয়, জানিয়েছেন এক্রামুল বারি।

উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত যে বিলটি গত ৯ ফ্রেব্রুয়ারি বিধানসভায় পেশ হয় তাতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের পরিচালন সমিতি গঠন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হবেন সরকার মনোনীত কোনও শিক্ষানুরাগী। এ ছাড়া শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, ছাত্র প্রতিনিধির পাশাপাশি আরও কয়েকজনকে মনোনীত করতে পারবে সরকার। কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কলেজগুলিতে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

রাজ্যপাল মনে করছেন, সরকার কখনও কোনও বিশেষ সম্প্রদায় পরিচালিত কলেজের জন্য আইনে বৈষম্য রাখতে পারে না। তাদের বিশেষ আর্থিক সাহায্য দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু নিয়ম সবার জন্যই এক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE