Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ময়নাগুড়িতে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পেছনে রাজনীতি রয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছিল আগেই৷ এ বার হরিদয়াল রায়কে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়ে গেল কোন্দলও৷

প্রহরা: হরিদয়ালের বাড়ির সামনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

প্রহরা: হরিদয়ালের বাড়ির সামনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পেছনে রাজনীতি রয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছিল আগেই৷ এ বার হরিদয়াল রায়কে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়ে গেল কোন্দলও৷

ময়নাগুড়ি সুভাষনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিদয়ালের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠতেই দলের শাসক দলের নেতারা সরাসরি তাঁর শাস্তি দাবি করেছিলেন৷ কিন্তু এখন তৃণমূলেরই অনেক নেতা ওই দাবিকে নস্যাৎ করে বলতে শুরু করেছেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন দাবি তোলা যায় না৷ বিতর্ক থামাতে এ বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করতে নেতাদের নির্দেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের জেলা নেতৃত্ব৷

সোমবার হরিদয়ালবাবুর বিরুদ্ধে সময়ের আগে প্রশ্নপত্র খোলার অভিযোগ উঠেছিল৷ তার দু’দিন পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একেবারে প্রশ্নফাঁসের মত চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে৷ তারপরই তৃণমূলে ময়নাগুড়ি- ১নম্বর সাংগঠনিক ব্লকের সভাপতি মনোজ রায় সাংবাদিক সম্মেলন করে হরিদয়ালবাবুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন৷ হরিদয়ালবাবু তৃণমূল শিক্ষা সেলের ওই ব্লকের সভাপতি বলে পরিচিত হলেও সে কথাও অস্বীকার করেন দলের নেতারা৷

মনোজবাবু এই দাবি তুললেও এলাকার আরেক তৃণমূল নেতা তথা দলের ময়নাগুড়ি- ২ নম্বর ব্লক সংগঠনিক ব্লকের সভাপতি শশাঙ্ক রায় বসুনিয়া কিন্তু হরিদয়ালবাবুর পাশে দাড়িয়েছেন৷ প্রসঙ্গত, হরিদয়ালবাবু শশাঙ্কবাবুর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বলেও পরিচিত৷ কিন্তু এর সঙ্গে আত্মীয়তার কোনও ব্যাপার নেই বলেই দাবি তৃণমূলের এই নেতার৷ শশাঙ্কবাবুর কথায়, ‘‘আমি বিশ্বাস করি না হরিদয়ালবাবুর মত একজন শিক্ষক এমন কাজ করতে পারেন৷ তাছাড়া তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ ভাবে একজন শিক্ষকের শাস্তি চাওয়াও উচিত নয়৷’’

শশাঙ্কবাবুর এই মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে৷ মুকুল রায়ের দল ছাড়ার পর মাঝে এক সময় শশাঙ্কবাবুর সঙ্গে দলের দূরত্বের কথাও রটে গিয়েছিল৷ এ দিনের জল্পনাতে সেটাও উঠে আসে৷ তবে শশাঙ্কবাবু বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলটাই মনেপ্রাণে করি৷ এবং বিশ্বাস করি একজন শিক্ষককে নিয়ে এমন মন্তব্য হওয়া উচিত নয়৷’’ শশাঙ্কবাবুর ভাইপো তথা ওই ব্লকের আরেক তৃণমূল নেতা তপন রায় বসুনিয়া এ দিন আবার বলেন, হরিদয়ালবাবুই ১ নম্বর ব্লকের শিক্ষা সেলের সভাপতি৷ তাঁর কথাতেও দলের অন্দরে বিতর্ক ছড়ায়৷

মনোজবাবু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তবেই আমরা হরিদয়ালবাবুর শাস্তির কথা বলেছিলাম৷ আর আমাদের ব্লকের শিক্ষা সেলের সভাপতি কে সেটা অন্য ব্লকের কারও জানার কথা নয়৷ জেলা শিক্ষা সেলের সভাপতিই বরং সেটা ভাল বলতে পারবেন৷’’

দলের অন্দরে বিতর্ক দানা বাধতেই বিষয়টি নিয়ে নেতাদের মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব৷ দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুই নেতার সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলব৷ তদন্ত চলতে থাকায় দলের কেউ যাতে এই মুহুর্তে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি না দেন সেটাও সবাইকে বলব৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Group Clash TMC হরিদয়াল রায়
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE