ইনসুলিন থেকে কাজু বাদাম, আচার থেকে কম্পিউটার প্রিন্টার— পশ্চিমবঙ্গ-সহ নানা রাজ্যের দাবি মেনে ৬৬টি ক্ষেত্রে করের হার কমাল জিএসটি পরিষদ। ১০০ টাকা পর্যন্ত সিনেমার টিকিটের দামের ক্ষেত্রেও জিএসটি-র প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির নেতৃত্বে আজ পরিষদের বৈঠকে ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্যও কিছুটা সুবিধার বন্দোবস্ত হয়েছে। ব্যবসার পরিমাণ বছরে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে, ব্যবসায়ী, কারখানা বা রেস্তোরাঁর মালিকরা নির্দিষ্ট হারে কর মিটিয়েই নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। প্রতিটি বেচাকেনার হিসেব পেশ না করলেও চলবে। এত দিন এই সুবিধা ছিল ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের বক্তব্য, ‘‘ছোট ও মাঝারি শিল্পের হয়ে লড়াইয়ে এটা বিরাট সাফল্য!’’
এর পরেও অবশ্য ১ জুলাই থেকেই জিএসটি চালু না করার দাবি থেকে সরছেন না অমিত। তাঁর যুক্তি, ‘‘১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করা এখনও খুবই কঠিন। দিল্লির ব্যবসায়ীরাও বলছেন, তাঁরা তৈরি নন।’’ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ কি তৈরি? অমিতবাবুর জবাব, ‘‘আগামী রবিবার পরিষদের বৈঠকে হবে। সেখানে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হবে।’’
আরও পড়ুন:বাংলার প্রশ্ন বিভ্রাটে গন্ধ অন্তর্ঘাতেরই
রাজ্য সরকার কবে বিধানসভায় জিএসটি বিল পাশ করাবে, তার কোনও দিন-ক্ষণ জানাতে পারেননি অমিতবাবু। অর্থ দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রই জিএসটি চালুর তারিখ ১ জুলাই থেকে পিছিয়ে দিতে পারে। ১৮ জুনের পরে ৩০ জুনও ফের বৈঠক ডাকাই তার প্রমাণ। শেষ পর্যন্ত তা না-হলে শেষবেলায় বিধানসভার অধিবেশন ডেকে রাজ্যের জিএসটি বিল পাশ করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারিও হতে পারে। ছ’মাসের মধ্যে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে নিলেই চলবে।
বাংলার মতো আঞ্চলিক সিনেমার ক্ষেত্রে জিএসটি-র হার কমানোর জন্য আজ জোরালো দাবি তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী। তাঁর দাবি মেনেই ১০০ টাকার কম টিকিটে জিএসটি-র হার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। এর মধ্যেও রাজ্যের প্রাপ্য ৯ শতাংশ ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বলে অমিতবাবু ঘোষণা করেছেন। কেন্দ্র নিজের ভাগের ৯ শতাংশ আদায় করলেও আগের স্তরে মেটানো করের টাকা ফেরত বা ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটের সুবাদে শেষ পর্যন্ত করের বোঝা ১ থেকে ২ শতাংশে নেমে আসবে, যা কার্যত এখনকার হারের সঙ্গে সমান।
মেদিনীপুর-সহ পশ্চিমবঙ্গের অনেক জেলার গরিব মহিলারা পরচুলার জন্য চুল সরবরাহ করেন। রাজ্যের দাবিতে তার উপরেও করের হার ২৮ থেকে শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে অমিতবাবুর যুক্তি ছিল, পশ্চিমবঙ্গ চর্মজ পণ্যের বড় উৎপাদক। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ থেকে চর্মশিল্প গুটিয়ে যাওয়ার ফলে এখন আরও ১০০০ কোটি টাকার লগ্নি আসছে রাজ্যে। সেই মোতাবেক চর্মশিল্পের জন্য পণ্য তৈরি করা বা জব ওয়ার্কের ক্ষেত্রেও করের হার ১৮ থেকে কমে হল ৫ শতাংশ। রাজ্যের দাবি মেনে ইনসুলিন, কাজু বাদাম ও জৈব গ্যাসের ক্ষেত্রেও করের হার ১২ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy