গাছ ভেঙে বন্ধ চলাচল।— নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক রাস্তা বন্ধ। যান চলাচল তো দূরঅস্ত্, পথচারী যাওয়ার উপায় পর্যন্ত নেই। ঝোড়ো হাওয়ায় রাস্তার উপরেই ভেঙে রয়েছে গাছ, ল্যাম্প পোস্ট। উড়ে গিয়েছে রাস্তার দারের দোকানের চালা। আর সেই সঙ্গে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। কখনও বাড়ছে, তো কখনও একটু কম। মাঝ রাত থেকে বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন জায়গায় জল জমতেও শুরু করে। এটাই চুম্বকে রবিবার মাঝরাত থেকে শহর কলকাতার চিত্র।
শুধু কলকাতা নয়, আশপাশের শহরতলি থেকে শুরু করে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং গোটা দক্ষিণবঙ্গের চেহারাটাও এর থেকে বিন্দুমাত্র আলাদা নয়। কোথাও গাছ পড়ে রেলের ওভারহেডের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। কোথাও বা রেললাইনের উপর ভেঙে পড়েছে গাছ। সব মিলিয়ে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়েছে। বিদ্যুতের তারে গাছ ভেঙে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যহত। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দমদম বিমানবন্দর থেকে উড়ান চলাচলও অনিয়মিত হয়। এরই মধ্যে আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই দুর্যোগ কমার কোনও লক্ষণ নেই। বরং নিন্মচাপ অতি গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
আরও পড়ুন
• কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে দুর্যোগ চলবে কাল পর্যন্ত
• বৃষ্টির দুর্ভোগ কলকাতা জুড়ে, দেখুন ছবি
কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, রাতভর বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ায় শহরে পঞ্চাশটিরও বেশি গাছ ভেঙে ও উপড়ে যায়। পুরকর্মীদের চারটি দল ওই গাছ সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজে নেমেছেন। এ দিনের দুর্যোগে রাসবিহারীর কাছে বিবি চ্যাটার্জী স্ট্রিট বেলেঘাটা মেন রোড, পূর্বাচল মেন রোড, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোড, পিজিএম শাহ রোড, বালি ব্রিজের কাছে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাওয়া রাস্তা-সহ বিভিন্ন জায়গায় ওই গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। এর পাশাপাশি বৃষ্টির জেরে ইএম বাইপাস-সহ শহরের বেশিরভাগ রাস্তাতেই প্রবল যানজট শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।
নারকেলডাঙা মেন রোডে তোলা নিজস্ব চিত্র।
এরই পাশাপাশি দমদম আন্ডারপাস, পাতিপুকুর আন্ডারপাস, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের উপর মুক্তারাম বাবু স্ট্রিট থেকে কলেজ স্ট্রিটের মুখ পর্যন্ত, আমির আলি রোড, তারাতলা ক্রসিং, উল্টোডাঙা আন্ডারপাস-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমেছে। কাঁকুড়গাছি আন্ডারপাস এবং মহাত্মা গাঁধী রোডের উপর হাঁটু পর্যন্ত জল জমেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। জল জমার কারণে মহাত্মা গাঁধীর উপর সৈয়দ সালে লেন ক্রসিং-এর কাছে বিস্তর জল জমে আছে। সেই কারণে গিরিশ পার্কের দিকে আসা সমস্ত বাস ও মিনি বাস শ্যামবাজার থেকে এপিসি রোড দিয়ে মানিকতলার দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ বাদে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা দুর্যোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। ঝড়ে রেললাইনের উপর বাঁশঝাড় পড়ে হুগলির চণ্ডিতলায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে বৃষ্টির ফলে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ব্যবসা বাণিজ্য শিকেয় উঠেছে। দোকান খোলা রয়েছে, অথচ ক্রেতা নেই। আনাজ বাজার বসলেও ক্রেতা খুব কম। রাস্তায়, অফিসে লোক সমাগম কম। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, ডোমকল, জলঙ্গি, ইসলামপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় এ দিন সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে। নদিয়ার নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর-সহ প্রায় সব জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। গত রাত থেকে বৃষ্টি হওয়ায় রানাঘাট, চাকদহ,ধানতলা-সহ বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিক জনজীবন ব্যহত।
তথ্য সহায়তায় শিবাজি দে সরকার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy