Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

গোমেন দুর্বল হলেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে

যতটা গর্জেছিল সে, ততটা বোধ হয় বর্ষাবে না। বাংলাদেশের আকাশে ঘূর্ণিঝড় গোমেনের গতিবিধি দেখে এমনটাই বলছেন হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা। প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কা জাগিয়ে বঙ্গোপসাগরে দানা বেঁধেছিল একটি নিম্নচাপ। পরে তা পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। তাইল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা তার নাম দেন ‘গোমেন’। উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকলেও গোমেনের গতি অত্যন্ত কম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ১১:০২
Share: Save:

যতটা গর্জেছিল সে, ততটা বোধ হয় বর্ষাবে না। বাংলাদেশের আকাশে ঘূর্ণিঝড় গোমেনের গতিবিধি দেখে এমনটাই বলছেন হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা।

প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কা জাগিয়ে বঙ্গোপসাগরে দানা বেঁধেছিল একটি নিম্নচাপ। পরে তা পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। তাইল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা তার নাম দেন ‘গোমেন’। উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকলেও গোমেনের গতি অত্যন্ত কম। তার ফলেই ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে সে।

আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, ইতিমধ্যেই গোমেন শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের তকমা হারিয়েছে। শুক্রবার দুপুরের পর সে এখন গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সে বাংলাদেশের যশোহর জেলা পেরোতে পারেনি। আবহবিদেরা বলছেন, আজ, শনিবারের মধ্যেই সে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এ দিন রাত পর্যন্ত মৌসম ভবন গোমেনের যে সম্ভাব্য গতিপথ জানিয়েছে, তাতে বাংলাদেশ অতিক্রম করে নদিয়া জেলার উপর দিয়ে বর্ধমান জেলা পর্যন্ত পৌঁছবে সে। গোমেন দুর্বল হলেও পুরোপুরি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন না আবহবিজ্ঞানীরা। কেন?

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের ব্যাখ্যা, বর্ষাকালে দক্ষিণবঙ্গে এমনিতেই মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকে। সম্প্রতি পূর্ব ও পশ্চিম ভারতের জোড়া নিম্নচাপের ধাক্কায় তার সক্রিয়তা আরও বেড়েছে। তার ফলে দুর্বল নিম্নচাপও এখানে ভারী বৃষ্টি ঘটাতে পারে। ‘‘গোমেন থেকে যে দুর্যোগের আশঙ্কা ছিল তা কেটে গিয়েছে। কিন্তু ভারী বৃষ্টির ভয়টা পুরোপুরি কাটেনি,’’ বলছেন গোকুলবাবু।

দক্ষিণবঙ্গে বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে হাওয়া অফিস। অতিবৃষ্টিতে নদীর জল ফুলে-ফেঁপে ওঠায় ইতিমধ্যেই জল বেড়েছে বীরভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলির সব নদীতেই। বৃহস্পতিবার সারা রাত বৃষ্টি হওয়ায় সেখানে অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হয়েছে। একেই সব কটি নদীর জলই বিপদসীমার অনেকটা উঁচু দিয়ে বইছে। প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকাগুলি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গোমেন চট্টগ্রামে আছড়ে পড়ার পর থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। শুক্রবারও দিনভর কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির মাঝে মেঘ সরে গিয়ে রোদ ও নীল আকাশের দেখাও মিলেছে। আবহবিদেরা বলছেন, বাংলাদেশে গোমেন আছড়ে পড়ার পর থেকে দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলের উপরিস্তরে হাওয়ার ঘূর্ণি সৃষ্টি হয়েছে। তার ফলে কখনও কখনও মেঘ কেটে যাচ্ছে। গোমেন যত দক্ষিণবঙ্গের দিকে এগোবে, ততই বাড়বে বৃষ্টি। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কোনও কোনও অঞ্চলে, বিশেষ করে মূর্শিদাবাদ, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া-হুগলি, বর্ধমান, বীরভূমে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসন সূত্রের খবর, উপকূলীয় জেলাগুলিতে নজরদারি থাকছে। মৎস্যজীবীদের সাগরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও বহাল রাখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE