Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

২০০ প্রার্থীর টেট-দরজা খুলল কোর্ট

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্য তাঁরা প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষা টিচার্স এবিলিটি টেস্ট বা টেটে বসার সুযোগ পাননি। এই ধরনের শ’দুয়েক প্রার্থীকে নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে বলে শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৫
Share: Save:

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্য তাঁরা প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষা টিচার্স এবিলিটি টেস্ট বা টেটে বসার সুযোগ পাননি। এই ধরনের শ’দুয়েক প্রার্থীকে নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে বলে শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

আদালত সূত্রের খবর, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন’ বা এনসিটিই-র নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্য ন্যূনতম যে-শিক্ষাগত যোগ্যতা দরকার, তা নেই বলেই ওই সব প্রার্থীকে চলতি বছরের টেটে বসার ফর্ম পূরণ করতে দেয়নি রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শিক্ষক নিয়োগের ওই পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই প্রার্থীরা। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ওই আবেদনকারীদের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, আদালতের অনুমতি না-নিয়ে ওই সব প্রার্থীর ফল প্রকাশ করা যাবে না।

ফর্ম পূরণ করতে না-দেওয়ার কারণ হিসেবে পর্ষদের আইনজীবী সুবীর সান্যাল জানান, এনসিটিই-র নির্দেশিকায় বলা আছে, টেটে বসতে হলে প্রার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে এবং বিএড অথবা ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। যে-সব প্রার্থী হাইকোর্টে মামলা করেছেন, তাঁরা ডিএলএড কোর্সে ভর্তি হয়েছেন, দু’বছর পড়েওছেন। কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে প্রশিক্ষণের শংসাপত্র পাননি। তা ছাড়া মামলাকারীদের অনেকেরই উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর নেই।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তও আদালতে জানান, এনসিটিই-র নির্দেশিকা অনুযায়ী মামলাকারীরা টেটে বসতে পারেন না। কারণ, তাঁদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতাই নেই।

মামলার আবেদনকারী প্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, এনসিটিই-র নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা রয়েছে, কেউ বিএড বা ডিএলএড কোর্সে ভর্তি হলেই তিনি টেটে বসতে পারবেন। তা ছাড়া তাঁদের মক্কেলরা ২০১৫-’১৭ সালের ডিএলএড পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ করেছেন। কিন্তু যথাসময়ে পরীক্ষা হয়নি। ওই কৌঁসুলিদের প্রশ্ন, রাজ্য সরকার যদি সময়মতো পরীক্ষা না-নেয়, তা হলে প্রার্থীরা প্রশিক্ষণের শংসাপত্র পাবেন কী ভাবে?

সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রাথমিক ভাবে তিনি মনে করছেন, এনসিটিই-র সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা শুধু প্রার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, নিয়োগ পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে নয়। সেই জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের ২০১৭ সালের টেটে বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা উচিত হবে না। কারণ, সময় অত্যন্ত মূল্যবান। তা চলে গেলে আর ফিরে আসে না।

মামলাকারীদের অন্য আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কমবেশি ২০০ জন টেটে বসতে চেয়ে মামলা করেছেন। ২৯ অক্টোবর অনলাইনে প্রাথমিক টেটের ফর্ম পূরণের শেষ দিন। হাইকোর্ট এ দিন পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে, মামলার আবেদনকারী প্রার্থীরা কী ভাবে ফর্ম পূরণ করবেন, তা যেন তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাকারী ২০০ প্রার্থীর টেটে বসার ব্যবস্থার পাশাপাশি সরকারের তরফেও কিছু প্রার্থীকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে কিছু প্রশিক্ষণরত (ডিএলএড) প্রার্থী টেট পাশ করেন। কিন্তু প্রশিক্ষণের চূড়ান্ত ফল না-বেরোনোয় তাঁদের অপ্রশিক্ষিত হিসেবেই গণ্য করা হয়েছিল। তাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষিত হয়ে থাকলে মেধা-তালিকার ভিত্তিতে তাঁদের নিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবারেই জানিয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TET Candidates Kolkata High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE