Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

এ বার আসছে শক্তিশালী সিসি ক্যামেরা

পুরো নাম অটোম্যাটিক নম্বর প্লেট রিডার (এএনপিআর) ক্যামেরা। এক-একটির দাম ৫ লক্ষ টাকারও বেশি। ক্যামেরাটির বিশেষত্ব হল, এখানে যে কোনও গাড়ির নম্বর স্বয়ংক্রিয় ভাবে ধরা পড়বে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০০
Share: Save:

একটি নামী সংস্থার সোনার দোকানে লুঠপাট চালিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তাদের খোঁজে নেমে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে তদন্তকারীরা দেখেছিলেন, ক্যামেরা রয়েছে তা আঁচ করে দুষ্কৃতীরা ওই সব এলাকা দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে গিয়েছে। এমন ভাবে ক্যামেরার উপরে হেডলাইটের আলো ফেলা হয়েছে যে তাতে গাড়ির নম্বর ধরাই পড়েনি। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে মাদক ও সাপের বিষ পাচারকারীরাও একই পন্থা অবলম্বন করে পালিয়ে যেতে পেরেছে। ওই সব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার কলকাতা-সহ শহরতলির গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুগুলিতে বসানো হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দামি ক্যামেরা।

পুরো নাম অটোম্যাটিক নম্বর প্লেট রিডার (এএনপিআর) ক্যামেরা। এক-একটির দাম ৫ লক্ষ টাকারও বেশি। ক্যামেরাটির বিশেষত্ব হল, এখানে যে কোনও গাড়ির নম্বর স্বয়ংক্রিয় ভাবে ধরা পড়বে। ইতিমধ্যেই হাওড়া এবং বিধাননগরের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এখন আরও ৫টি এমন ক্যামেরা বসানো হচ্ছে বারাসতের চাঁপাডালি, ডাকবাংলো মোড় এবং কলোনি মোড়ের মতো এলাকায়। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অপরাধ দমন এবং ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন রুখতে এই ক্যামেরা সাহায্য করবে।’’

সাধারণ সিসি ক্যামেরার তুলনায় এই ক্যামেরার বিশেষত্ব কী?

কোনও গাড়ির নম্বর প্লেট দেখে সেটিকে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা সাধারণ সিসি ক্যামেরায় আলাদা ভাবে থাকে না। এএনপিআর ক্যামেরার বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ মিশ্র জানান, যখন কোনও গাড়ি সিগন্যালে দাঁড়ায়, সাধারণ সিসি ক্যামেরা একমাত্র তখনই সেটির ছবি নিতে পারে। চলন্ত গাড়ির নম্বর এমন ক্যামেরায় ধরা পড়ে না। ফলে কোনও গাড়ি অপরাধ করে পালাচ্ছে কি না বা আইন ভাঙছে কি না, তা সব সময়ে ধরা যায় না। কিন্তু ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার গতিবেগে চলা কোনও গাড়ির নম্বর প্লেটের ছবিও স্পষ্ট ভাবে নিতে পারে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এএনপিআর ক্যামেরা। অনির্বাণবাবু বলেন, ‘‘এই আধুনিক ক্যামেরায় এফপিএস (ফ্রেম পার সেকেন্ড) এবং এইচএলসি (হাই লাইট কমপেনসেশন) প্রযুক্তিতে কাজ হয়।’’

এফপিএস প্রযুক্তিতে এই ক্যামেরা দ্রুত গতিতে যাওয়া কোনও গাড়িকে একটি ফ্রেমের মধ্যে স্থির রেখে ছবি তুলতে পারে। আর এইচএলসি প্রযুক্তিতে হেডলাইটের মতো কোনও জোরালো আলো ক্যামেরার উপরে ফেললেও তার ছবি তোলা বন্ধ হয় না।

তবে বিধানগর কমিশনারেট সূত্রেই খবর, সেখানে এএনপিআর ক্যামেরা বসানোর পরেও সেগুলি ঠিক মতো কার্যকর হয়নি। কেন? অনির্বাণবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের ক্যামেরা মূলত তৈরি হয় চিন এবং তাইওয়ানে। সে দেশের ট্র্যাফিক ব্যবস্থার সঙ্গে ক্যামেরাগুলির মিল থাকে। এ ছাড়াও, কোন অবস্থানে ক্যামেরাটি লাগানো হয়েছে তার উপরেও ফলাফল নির্ভর করে।’’

তবে অনির্বাণবাবুর মতে, এএনপিআর ক্যামেরার প্রযুক্তির সঙ্গে ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে জুড়ে দিলে কোনও গাড়ি ট্র্যাফিক নিয়ম ভাঙলেও তা সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়বে। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় এই ক্যামেরা এমন বি়জ্ঞানসম্মত ভাবে বসানো হয়েছে যে নম্বর ছাড়াও গাড়িতে কারা বসে রয়েছেন, তাঁদের চেহারা এবং গতিবিধিও পরিষ্কার ধরা পড়ছে। অপরাধ দমনে তা সাহা়য্য করছে পুলিশকেও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CC camera Bidhannagar Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE