হাসপাতালে রংপাল। নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসা বিভ্রাট নিয়ে কতই না অভিযোগ! ঠিক সেই সময় ভুটানের ছোট্ট তিন বছরের ছেলে উইন্ড পাইপে আটকে থাকা কলমের খাপ বার করে, তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে দিল বাইপাস লাগোয়া দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল।
কতই বা বয়স রংপালের (নাম পরিবর্তিত)। মেরেকেটে তিন। গত ২২ জানুয়ারি থিম্পু থেকে খানিক দূরে নিজের বাড়িতে বসে খেলছিল বাবার সঙ্গে। আচমকাই বাবার কলমের ছিপি গিলে ফেলতেই বিপত্তি। রংপালের তখন শ্বাস আটকে আসছে। অক্সিজেনের অভাবে জীর্ণ হতে বসেছে শরীর। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কলমের ‘ক্যাপ’ বার করা যায়নি। এর মধ্যেই প্রথম বার হার্ট অ্যাটাক। রংপালকে বাঁচানোর জন্য যখন তাকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে আসা হচ্ছে কলকাতায়, সে সময় আবারও হার্ট অ্যাটাক। পর পর দু’বার।
অচেতন অবস্থায় রংপালকে ভর্তি করা হয়েছিল ওই বেসরকারি হাসপাতালে। এর পর যা হয়েছিল, তাকে যুদ্ধ বললেও বোধ হয় কম বলা হবে। হাসপাতালের সিনিয়র কনস্যালটেন্সি এবং শিশু বিভাগের প্রধান অশোক মিত্তলের কথায়, ‘‘ভেন্টিলেটরে রেখে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার পর আমরা রংপালকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাই। উইন্ড পাইপে আটকে থাকা কলমের ক্যাপ বার করার জন্য রিজিড ব্রঙ্কিওস্কোপ পদ্ধতিতে আমরা চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, তা এত গভীরে চলে গিয়েছিল যে আমরা সফল হইনি।’’
আরও পড়ুন: জোড়া কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড মহানগর, দেখুন ছবি
আরও পড়ুন: শুধু করলার রস খেয়ে ওজন কমানো যায়, জানতেন?
বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার। যাকে বলে ‘চেষ্ট সার্জারি’। কলমের ছিপি তো বার হল। কিন্তু, তত দিনে রংপালের ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। প্রবল জ্বর। রক্তচাপ অনিয়মিত। রংপাল বাঁচবে তো! আতঙ্কটা বাড়ছিল। কিন্তু, কথায় বলে যার শেষ ভাল, তার সব ভাল।
দীর্ঘ চিকিৎসা আর সেবায় রংপাল সুস্থ হয়ে উঠেছে। ফিরে গিয়েছে নিজের দেশ ভুটানে। চিকিৎসকেরা বলছেন, রংপালের ঘটনায় সমস্ত অভিভাবকদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। ছোটদের বোতাম, পয়সা, পেনের খাপ, ন্যাপথলিন নিয়ে খেলতে বারণ করা উচিত। সে সব গলায় আটকে কিন্তু রংপালের মতো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy