প্রতীকী ছবি।
কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গির আক্রমণে এমনিতেই ত্রাহি অবস্থা। এর মধ্যে প্লেটলেট নিয়ে এক শ্রেণির ডাক্তারের ভুল প্রেসক্রিপশন বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে। সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতাল তো বটেই, সরকারি হাসপাতাল থেকেও প্লেটলেট চেয়ে অজস্র ‘রিকুইজিশন’ যাচ্ছে বিভিন্ন ব্লাডব্যাঙ্কে। অথচ তার মধ্যে অনেককেই প্লেটলেট দেওয়ার দরকার নেই!
অনেক ক্ষেত্রে রোগীর প্লেটলেটের পরিমাণ না মেপেই ৪-৫ ইউনিট প্লেটলেট চেয়ে পাঠানো হচ্ছে। অনেক হাসপাতাল রোগীর ৫০-৬০ হাজার প্লেটলেট কাউন্ট থাকা সত্ত্বেও ৩-৪ ইউনিট প্লেটলেট আনতে বলছে। ব্লাডব্যাঙ্কের কর্মীরা সেই রিকুইজিশন পত্রপাঠ ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তা নিয়ে আবার রোগীর পরিজনদের সঙ্গে তাঁদের বিতর্ক হচ্ছে, হেনস্থার অভিযোগ উঠছে।
গত ১৮ অক্টোবর শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি হন সল্টলেকের অঙ্কিত প্রসাদ। তাঁর শরীরে রক্তক্ষরণ বা ‘ফ্লুইড ডেফিশিয়েন্সি’-জনিত সমস্যা ছিল না। প্লেটলেট ৫০ হাজারের বেশি ছিল। তবু চিকিৎসকেরা তাঁর পরিজনদের জরুরি ভিত্তিতে ৪ ইউনিট প্লেটলেট আনতে বলেন। মানিকতলা ব্লাডব্যাঙ্ক সেই রিকুইজিশন প্রত্যাখ্যান করে। ওই দিনই হাওড়া জেলা হাসপাতাল থেকে ৭৫ বছরের কানন মাইতির জন্য ৫ ইউনিট প্লেটলেটের রিকুইজিশন দেওয়া হয়। অথচ তাঁর প্লেটলেট মাপাই হয়নি! এ বারও রিকুইজিশন ফিরিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্লাডব্যাঙ্ক।
আন্তর্জাতিক গাইডলাইন • প্লেটলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নীচে গেলে বা রক্তক্ষরণ শুরু হলে
১৭ অক্টোবর মধ্য কলকাতার এক নার্সিংহোম থেকে ২২ বছরের রহিমা বিবি-র জন্য ২ ইউনিট প্লেটলেট চাওয়া হয়। অথচ ফর্মেই লেখা ছিল, প্লেটলেট কাউন্ট ‘অ্যাডিকুয়েট’, মানে যথেষ্ট। কিন্তু ‘অ্যাকিউট অ্যানিমিয়া’ রয়েছে বলে প্লেটলেট লাগবে! যা দেখে ব্লাডব্যাঙ্কের কর্মীরা হতভম্ব। কারণ অ্যানিমিয়ায় প্লেটলেট দরকার হয় না, দরকার হয় প্যাকসেল। উত্তর শহরতলির একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ১৮ অক্টোবর নবনীতা পালের জন্য ৪ ইউনিট প্লেটলেটের রিকুইজিশন যায়। অথচ রোগীর তখন কত প্লেটলেট রয়েছে, তা লিখেই পাঠাননি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। অভিযোগ, এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন।
অথচ হেমাটোলজিস্টরাই বলছেন, অপ্রয়োজনে প্লেট়লেট দেওয়া মানে প্লেটলেট-এর সঙ্কট তৈরি হওয়া। তা ছা়ড়া অপ্রয়োজনে প্লেটলেট দিলে ‘ট্রান্সফিউশন’ সংক্রান্ত সমস্যাও হতে পারে। বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের কানেও পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর কথায়, ‘‘রাজ্য এডস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রকল্প অধিকর্তা সুরেন্দ্র গুপ্তকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy