নিম্নচাপের জেরে আরও চারদিন চলবে বৃষ্টি।—প্রতীকী ছবি।
ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বুধবার সেটি গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছে। তার জেরেই হেমন্তে জোরালো বৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে গাঙ্গেয় বঙ্গে। বস্তুত মঙ্গলবার গভীর রাত থেকেই হেমন্ত বিদায় নিয়েছে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে। দফায় দফায় বৃষ্টির সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা নেমেছে বটে কিন্তু বাতাসে ঢুকে পড়েছে জোলো হাওয়া। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবারও গাঙ্গেয় বঙ্গের বেশির ভাগ জেলায় বৃষ্টি হবে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, উপকূলীয় জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবারও গভীর নিম্নচাপের প্রভাব পুরোপুরি কাটবে না।
আরও পড়ুন: বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মৃত্যু কত, হিসেব চাইল আদালত
তবে উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, গভীর নিম্নচাপটি মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে ওডিশা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসবে। তবে স্থলভূমিতে ঢুকবে না সে। গণেশবাবু বলেন, উপকূলের কাছ থেকে গভীর নিম্নচাপটি বাঁক নিয়ে উত্তর দিকে সরে যাবে এবং ধীরে ধীরে শক্তি খুইয়ে মিলিয়ে যাবে।
রাজ্য থেকে বর্ষা বিদায় নিয়েছে এক মাসেরও আগে। কিন্তু বৃষ্টি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বাংলার। নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্তের বারবার হানাদারিতে বিগড়ে যাচ্ছে ঋতু বদলের ছন্দ। পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ঠেলায় ঋতুচক্র বিগড়ে গিয়েছে। শীতের আগমন বার্তা নিয়ে আসা হেমন্ত উধাও হয়েছে। এটাই জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত। যদিও মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীদের অনেকেই এ তত্ত্ব মেনে নিতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, বর্ষা বিদায়ের পরেই সাগরে জোরালো নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
অনেকে অবশ্য এ প্রশ্নও তুলছেন, শীত তো এসে গিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। এ দিন মহানগরে দিনের বেলা বেশ শীত অনুভূত হয়েছে। তা হলে কি নিম্নচাপের ঠেলায় শীত এগিয়ে এল?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা বলছেন, মেঘলা আকাশ এবং বাড়তি জোলো হাওয়ার প্রভাবে এ দিন তাপমাত্রা দিনের বেলায় নেমে গিয়েছিল। কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। কিন্তু একে শীত বলা অনুচিত হবে। শীতের অর্থ দিনের বেলা তাপমাত্রা বেশি এবং রাতের বেলা তাপমাত্রা কম। এ ক্ষেত্রে রাতের তাপমাত্রা কিন্তু সাড়ে ২২ ডিগ্রির কাছাকাছি রয়েছে। ফলে গুমোট আবহাওয়া মিলছে। ফলে শীত-শীত মনে হলেও এটা ছদ্মশীত বলেই দাবি করছেন আবহবিজ্ঞানীরা।
বাংলায় ধাপে ধাপে শীত জাঁকিয়ে বসে। বাতাসে মেলে হিমেল ও শুকনো ভাব। কিন্তু এই গভীর নিম্নচাপের ঠেলায় বাতাসে প্রচুর পরিমাণ জোলো বাষ্প ঢুকেছে। তার প্রভাব কাটতে সময় লাগবে। আপাতত তিন-চার দিন তো শীতের নামগন্ধ মিলবে না। তার পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বদলাবে, মন্তব্য আলিপুরের এক পদস্থ কর্তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy