Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষকদের হাতে ছাত্র সংসদের তহবিল চান পার্থ

নির্বাচিত ছাত্র সংসদের বদলে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সিদ্ধান্ত তাঁরা আগেই নিয়েছেন। কলেজের ছাত্র সংসদের তহবিলের দায়িত্ব পড়ুয়াদের বদলে শিক্ষকদের হাতে দেওয়ার ব্যাপারেও যে ভাবনাচিন্তা চলছে, এ বার সেই ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সংগ্রহশালা ঘুরে দেখলেন শিক্ষামন্ত্রী। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সংগ্রহশালা ঘুরে দেখলেন শিক্ষামন্ত্রী। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০২
Share: Save:

নির্বাচিত ছাত্র সংসদের বদলে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সিদ্ধান্ত তাঁরা আগেই নিয়েছেন। কলেজের ছাত্র সংসদের তহবিলের দায়িত্ব পড়ুয়াদের বদলে শিক্ষকদের হাতে দেওয়ার ব্যাপারেও যে ভাবনাচিন্তা চলছে, এ বার সেই ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

রবিবার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পাঠকক্ষের উদ্বোধনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মন্তব্য করেন, ছাত্র সংসদের টাকাপয়সার দায়দায়িত্ব পড়ুয়াদের কাছ থেকে শিক্ষকদের হাতে এলে সমস্যা অনেকটাই কমবে। কেন এমনটা মনে করছেন তিনি? প্রশ্ন করা হলে পার্থবাবু বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদের তহবিলের দায়িত্ব শিক্ষকদের হাতে এলে ভাল হবে। অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলে সেই ব্যবস্থাই রয়েছে। পড়ুয়ারা অতটা পরিণত নয়। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরিণত। তহবিলের দায়িত্ব পরিণতদের হাতে থাকাই ভাল।’’ সেই সঙ্গেই পার্থবাবুর সংযোজন, তার পরেও অভিযোগ যে একেবারে আসবে না, তা নয়।

বিরোধী শিবিরের পর্যবেক্ষণ, অধিকাংশ জায়গায় গোষ্ঠী-কোন্দলের প্রধান কারণ যে তহবিলের উপরে কর্তৃত্ব রাখা, মন্ত্রী পরোক্ষে সেটাই মেনে নিলেন। পরিণত-অপরিণত তত্ত্ব খাড়া করেছেন সেই জন্যই।

শুক্রবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে শাসক দলের ছাত্র শাখা টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর মারামারির ঘটনা শিক্ষা শিবিরে তোলপাড় চলছে। ওই কলেজ সূত্রের খবর, নবীন বরণের জন্য দু’লক্ষ ১৬ হাজার টাকা চেয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদ। তার মধ্যে এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের। ক্রীড়া খাতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা চেয়েছে সংসদ। কিন্তু সেই সংসদের সাধারণ সম্পাদক কে, তা নিয়েই বিবাদ চলছে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। তার জেরেই ওই দিন ব্যাপক ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ।

তহবিলের রাশ শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে সম্প্রতি চারুচন্দ্র কলেজেও গোলমাল হয়। পড়ুয়াদের মাথা ফেটে রক্ত ঝরে। জয়পুরিয়া কলেজেও রাশ হাতে রাখতে চেয়ে কাজিয়ায় মেতেছে দুই গোষ্ঠী। সে-ক্ষেত্রেও ছাত্র সংসদের তহবিলের প্রশ্ন জড়িত বলে জানান কলেজ-কর্তারা। শিক্ষাজগতের একটি বড় অংশের অভিমত, অর্থই যে বিদ্যাস্থানেও অনর্থের কারণ হয়ে উঠছে, সেটা বুঝেই তহবিলের ভার শিক্ষকদের দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী।

এ দিন মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, কবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল চালু হবে? পার্থবাবু বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তি তো দেওয়াই হয়েছে। এ বার নির্বাচন হবে। তার পরেই গড়া হবে কাউন্সিল।’’

ছাত্র-কাজিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী এ দিন অক্ষেপ করেন, তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ফোরণের ফলে অনেকে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কত নথি, পুরনো প্রামাণ্য বিষয়বস্তু সংরক্ষণ করা হচ্ছে। তা হলে সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ কমবে কেন? সাহিত্য আর তথ্যপ্রযুক্তি, দু’টিকেই পাশাপাশি রেখে এগিয়ে চলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE