Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জেটলি আসবেন শপথে, দিলীপরা বয়কটের পথেই

স্ববিরোধ নাকি কৌশল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে বিজেপি-র দু’রকম অবস্থানে এই প্রশ্নই উঠে গেল। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুধবার জানান, শাসক দলের লাগাতার হিংসাত্মক আক্রমণের প্রতিবাদে তাঁরা কাল, শুক্রবার নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০৩:০১
Share: Save:

স্ববিরোধ নাকি কৌশল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যোগদান নিয়ে বিজেপি-র দু’রকম অবস্থানে এই প্রশ্নই উঠে গেল।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুধবার জানান, শাসক দলের লাগাতার হিংসাত্মক আক্রমণের প্রতিবাদে তাঁরা কাল, শুক্রবার নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করবেন। শপথ চলাকালীন বেলা ১টা থেকে বিকেল ৪টে জেলায় জেলায় এসপি বা এসডিও দফতরে বিক্ষোভ হবে। কলকাতায় বিক্ষোভ হবে ডিসি-দের দফতরে। অথচ এ দিনই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ দিল্লিতে বলেন, ‘‘অরুণ জেটলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন। দল ও সরকার উভয়ের পক্ষ থেকেই তিনি প্রতিনিধিত্ব করবেন।’’ জেটলিকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’

অমিতের সঙ্গে দিলীপের এই মতপার্থক্যকেই অনেকে স্ববিরোধ হিসাবে দেখছেন। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘বয়কটের সিদ্ধান্ত আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। এই সিদ্ধান্তে আমরা অনড়। এখন
তাঁরা ঠিক করবেন, আমাদের পাশে থাকবেন, নাকি রাজ্য সরকারের পাশে!’’ দিলীপবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলায় রাজনীতি করছেন না। আমরাই রাস্তায় আছি, মার খাচ্ছি। এখানে অস্তিত্বের লড়াই। শাসকের মারের মোকাবিলা করে সংগঠন মজবুত করার দায়িত্ব
আমার কাঁধে। এখানে দলটাকে কংগ্রেস হতে দেব না। সুতরাং, শপথ বয়কট হবেই।’’

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, আসলে ছক কষেই দু’মুখো কৌশল নিয়েছে মোদীর দল। রাজ্যসভায় বিল পাশ করানোর তাগিদে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা মমতার সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে চলছেন। সে জন্যই জেটলিকে মমতার শপথে পাঠানো হচ্ছে। আবার ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে আরও আসন জিততে সংগঠন মজবুত করায় জোর দিচ্ছেন দিলীপবাবুরা। সে জন্যই তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করে জমি আদায়ের বার্তা থেকে সরছেন না।

অমিত শাহও অবশ্য বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি রাজ্য নেতৃত্বের মত উপেক্ষা করছেন না। মমতার প্রতি বিজেপি-র দলগত অবস্থান কী হবে? অমিতের জবাব, ‘‘মমতার সঙ্গে সংঘর্ষই চলবে।’’

এ দিকে সংগঠন বিস্তারের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের দু’বছরের সাফল্য প্রচার এবং শাসকের হামলা মোকাবিলার জন্য দু’টি কমিটি গড়েছে বিজেপি। দ্বিতীয় কমিটিতে রাখা হয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। এ বার বিধানসভা ভোটের দলীয় প্রার্থীদের আগামী ২ জুন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশের সঙ্গে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সেখানে ভোটে কেন্দ্র পিছু নেতা-কর্মীদের ভূমিকার চুলচেরা বিশ্লেষণ হওয়ার কথা। তার ভিত্তিতে সংগঠনে রদবদলও হতে পারে বলে দিলীপবাবু এ দিন জানান।

রাজ্য বিজেপি যোগ না দিলেও সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে মমতার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান বিমল গুরুঙ্গ। বাগডোগরা থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে এ দিন গুরুঙ্গই এ কথা জানিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে পাহাড়ের নতুন তিন বিধায়ক, মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি এবং প্রতি মহকুমার এক জন করে নেতাও ওই অনুষ্ঠানে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arun Jaitley Oath Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE