Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শহিদ দিবসে ফের হুঁশিয়ারি দিল কেএলও

বছরের গোড়ায় ই-মেলে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। বছরের শেষে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ কেএলওর স্বঘোষিত কমান্ডার জীবন সিংহ কোচের নাম করে ছবি ও বিবৃতি পাঠিয়ে ফের সশস্ত্র লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়া হল। রবিবার ২৬ ডিসেম্বর কেএলওর ‘শহিদ দিবস’-এর দিন ওই ছবি-বিবৃতি পৌঁছেছে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও।

জীবনের পাঠানো বার্তা। নিজস্ব চিত্র।

জীবনের পাঠানো বার্তা। নিজস্ব চিত্র।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০২
Share: Save:

বছরের গোড়ায় ই-মেলে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। বছরের শেষে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’-এ কেএলওর স্বঘোষিত কমান্ডার জীবন সিংহ কোচের নাম করে ছবি ও বিবৃতি পাঠিয়ে ফের সশস্ত্র লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়া হল। রবিবার ২৬ ডিসেম্বর কেএলওর ‘শহিদ দিবস’-এর দিন ওই ছবি-বিবৃতি পৌঁছেছে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও।

ফি বছর ২৬ অগস্ট কেএলও ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে। ভারত-মায়ানমার সীমান্তের কোনও গোপন ডেরায় ওই দিনটি পালিত হয়েছে বলে বোঝাতেই হোয়াটসঅ্যাপে ছবি ও বিবৃতি ছড়ানো হয়েছে। বিষয়টিকে ভাবাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনকে। কারণ, আগামীকাল, ২৮ অগস্ট কেএলও-র প্রতিষ্ঠা দিবস। অতীতে ওই দিনটির আগে-পরে উত্তরবঙ্গে একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।

তাই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে উত্তরের প্রতিটি জেলায় ব্যাপক কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। রাজ্য পুলিশের এডিজি (উত্তরবঙ্গ) এন রমেশবাবু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের সব জেলায় বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। টহলদারি দ্বিগুণ করা হয়েছে।’’

মাস তিনেক আগে আলাদা কোচবিহার রাজ্যের দাবিদার একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘সেনা’ দল গঠন করে বিশাল মহড়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া অবস্থানের ফলে অবশ্য তা হয়নি। তাই কেএলও-র ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ বার্তাকে হালকা ভাবে দেখতে নারাজ প্রশাসন। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় নাশকতা রুখতে সশস্ত্র পুলিশবাহিনী টহল দিচ্ছে। গত বছরের শেষ দিকে রটেছিল, জঙ্গি বিরোধী সেনা অভিযানের সময়ে মায়ানমার সীমান্তে নিহত হয়েছেন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন প্রধান জীবন সিংহ। কিন্তু, চলতি বছরের গোড়ায় মায়ানমারে এসএসসিএন সহ ৫টি সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে ভারত-বিরোধী লড়াইয়ের চুক্তিপত্রে কেএলও প্রধান সই করেছেন বলে কিছু তথ্য পায় রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। তা নিয়ে তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন যে কেএলও নাগা ও মিজো জঙ্গিদের একাংশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফের উত্তরবঙ্গে নাশকতার ছক কষেছে।

কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দারা জানান, ১৯৯৩ সালে কেএলও পৃথক রাজ্যের দাবিতে আসরে নামার সময় থেকেই আলফার মদত নিয়েছে। ভুটানে শিবির গড়ে উত্তরবঙ্গে একের পর এক হামলা চালিয়েছে তারা। সেনা অভিযানে সেই ঘাঁটি ভেঙে যাওয়ার পরে কেএলও প্রধান বিদেশে আত্মগোপন করেন। তবে কেএলও-র নাম করে হুমকি, টাকা তোলা, নাশকতার ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে। ২০১৩ সালে জলপাইগুড়ির বজড়াপাড়ায় প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রাক্কালেই প্রাণঘাতী সাইকেল বোমা ফাটানো হয়েছে। এর পরে গত বছরের শেষ দিকে সেনা অভিযানে কেএলও প্রধান নিহত হয়েছেন বলে খবর চাউর হয়।

কিন্তু, চলতি বছরের গোড়ায় উত্তর পূর্ব ভারতের ৮টি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে একই ছাতার তলায় থাকার চুক্তিতে কেএলও প্রধান সই করেছেন বলে কিছু তথ্য কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দাদের হাতে পৌঁছয়। সে জন্যই বর্ষশেষের বার্তাকে এতটুকুও হালকা ভাবে নিচ্ছে না পুলিশ-প্রশাসন। প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, বাড়তি সতর্কতা রয়েছে সব জেলাতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KLO Martyrs Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE