Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

দল বদলাচ্ছি, তৃণমূলের ডেরা থেকে দাবি শঙ্করের

শাসক দলের জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা দখল এখন নিছক সময়ের অপেক্ষা। কলকাতায় তৃণমূলের ডেরায় বসে বৃহস্পতিবার ওই পুরসভার প্রধান শঙ্কর মণ্ডল বলছেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। ৩০ জুলাই পুরসভার ১১ জন বামফ্রন্ট কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি।’’

শঙ্কর মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র

শঙ্কর মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৩
Share: Save:

শাসক দলের জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা দখল এখন নিছক সময়ের অপেক্ষা।

কলকাতায় তৃণমূলের ডেরায় বসে বৃহস্পতিবার ওই পুরসভার প্রধান শঙ্কর মণ্ডল বলছেন, ‘‘তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। ৩০ জুলাই পুরসভার ১১ জন বামফ্রন্ট কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি।’’ তবে বামফ্রন্টের দু’জন কাউন্সিলর, অর্পিতা শী এবং পরিমল সরকার ওই পথে হাঁটছেন না।

ওই পুরসভায় ১৭টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে গত পুরভোটে সিপিএমের প্রতীক চিহ্ন নিয়ে পাঁচ জন, বাম-সমর্থিত নির্দল ছ’জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের দুজন প্রার্থী জয়ী হন। বাকি চার জন কংগ্রেসের। এই অবস্থায় সিপিএমের প্রতীকে জেতা তিন জন, বাম-সমর্থিত নির্দল ছ’জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের দুজন তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন। ওই ১১ জনের মধ্যে পুরপ্রধান শঙ্কর মণ্ডল যেমন লালবাগ জোনাল কমিটির সদস্য এবং জিয়াগঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদক পদে রয়েছেন পান্থ গোস্বামী।

বামফ্রন্টের কাউন্সিলরদের দলত্যাগ করা নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের পক্ষে এটা অশনি সংকেত। যে ভাবে আর্থিক অবরোধ করে, ভয়-প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূল একের পর এক পুরসভা দখল করছে তা এক প্রকার ফ্যাসিবাদী আচরণ!’’

যা শুনে শঙ্কর মণ্ডল জানিয়েছেন, তিনি নিজে পুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য দলের অনুমোদন চেয়েছিলেন। দল অনুমোদন দেয়নি। বামফ্রন্টের নির্দেশ ছিল, সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে গণকনভেনশন ডেকে ইস্তফা দিতে হবে। কিন্তু কাউন্সিলরদের অনেকেই ইস্তফা দিতে রাজি হননি। কারণ, ইস্তফা দিয়ে ফের ভোটে দাঁড়াতে হলে তখন ভোটারদের কাছে গিয়ে কোন মুখে ভোট চাইবেন তাঁরা?

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিঃশব্দে দুটো গাড়িতে করে জিয়াগঞ্জ থেকে বামফ্রন্টের ১০ জন কাউন্সিলর তারাপীঠ রওনা দেন। তারাপীঠের একটি হোটেলে রাত কাটানোর পরে বুধবার সকালে পুজো দিয়ে সরাসরি তাঁরা এসে পৌঁছন কলকাতার বিধাননগরের একটি গেস্ট হাউসে। শঙ্করবাবু জানান, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ দুটো যমজ শহরে গত ১০ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন গত দু’বছর ধরে থমকে গিয়েছে।

জঙ্গিপুরের পরে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ—একের পর এক পুরসভা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু অদ্ভূত ভাবে সিপিএমের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব চুপ। কোনও আন্দোলন নেই। এখন দলীয় নেতৃত্ব পথে নামবে না তো আর কবে নামবে? প্রশ্ন তুলেছেন শঙ্কর নিজেই।

তবে জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ধুলিয়ানের পরে কান্দি (আদালতে বিষয়টি যদিও ঝুলে রয়েছে), তার পরে বহরমপুর, বেলডাঙা পুরসভা দখলের পরে মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদ দখল করার কথা জানান। ওই তালিকায় জঙ্গিপুরের নাম ছিল না। ফাউ হিসেবে জঙ্গিপুর দখল আসে শাসক দলের। তবে গত বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে এসে জিয়াগঞ্জের মাটিতে দাঁড়িয়ে জিয়াগঞ্জ পুরসভা দখলের কথা বলে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE