Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিয়মের গেরোতেই থমকে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ

প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে বিভ্রাট মিটতে না-মিটতে মাধ্যমিক স্তরে শূন্য পদ পূরণে ঝামেলা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা শিক্ষক নিয়োগের নতুন নিয়মবিধি বাতলে দিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের অনেক স্কুলেই এত দিন সেই বিধি মানা হয়নি।Le

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০২:৫৭
Share: Save:

প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে বিভ্রাট মিটতে না-মিটতে মাধ্যমিক স্তরে শূন্য পদ পূরণে ঝামেলা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা শিক্ষক নিয়োগের নতুন নিয়মবিধি বাতলে দিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের অনেক স্কুলেই এত দিন সেই বিধি মানা হয়নি। এখন শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে সেই সব স্কুল। পুরনো নিয়ম থেকে নতুন নিয়মে আসতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছেন বহু স্কুলের কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, নিয়মবিধি বদলের গেরোতেই বিলম্বিত হচ্ছে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া।

বিভ্রান্তিটা কী নিয়ে? এক কথায় সমস্যাটা যোগ্যতামান নিয়ে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে শিক্ষক প্রশিক্ষণের কেন্দ্রীয় সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনসিটিই) জানিয়ে দিয়েছিল, শুধু স্নাতক হলেই নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষকতা করা যাবে। অনার্স স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা সেখানে আলাদা গুরুত্ব বা পারিশ্রমিক পাবেন না। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াতে হলে অনার্স বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। সেখানে ওই যোগ্যতামান যথারীতি পৃথক গুরুত্বও পাবে।

এনসিটিই-র সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও বহু স্কুলই সেই বিধির ধার ধারেনি। পুরনো নিয়মে নবম ও দশম শ্রেণির জন্য সাধারণ স্নাতকের সঙ্গে সঙ্গে অনার্স বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রার্থীও নেওয়া হচ্ছিল এত দিন। আর সেই রীতি মেনেই শূন্য পদের তালিকা তৈরি করেছিল ওই সব স্কুল। সেই তালিকায় জানানো হচ্ছিল, নবম-দশমে এত অনার্স ডিগ্রিধারী শিক্ষক চাই। অথচ নতুন নিয়মে ওই স্তরে অনার্সের আলাদা গুরুত্বই নেই। সেই গুরুত্ব দিয়ে শুধু অনার্স প্রার্থী নিলে সাধারণ স্নাতক প্রার্থীরা সুযোগই পাবেন না।

আরও পড়ুন: মে-তেই সাত পুরভোট, কোর্টকে জানাল রাজ্য

এমন সমস্যা হতে পারে বুঝেও পুরনো নিয়মে তালিকা পাঠানো হচ্ছে কেন? এক জেলা পরিদর্শক জানান, পুরনো নিয়মে সাধারণ স্নাতকদের সঙ্গে অনার্স স্নাতকেরা নবম-দশম শ্রেণিতে পড়াতেন। তাই ওই স্তরে কোনও অনার্স ডিগ্রিধারী শিক্ষকের পদ খালি হলে অনার্স যোগ্যতারই নতুন শিক্ষক দাবি করছে স্কুল। জেলা পরিদর্শকের কাছে শূন্য পদের যে-তালিকা পাঠানো হতো, তাতে যে-যোগ্যতার শিক্ষক-পদ খালি হচ্ছে, সেটা উল্লেখ করটাই ছিল দস্তুর। তাই নবম-দশম শ্রেণির জন্যও অনার্স ডিগ্রিধারী প্রার্থীদেরই তালিকা তৈরি করা হচ্ছিল। কিন্তু এনসিটিই-র নতুন নিয়মে নবম-দশমে শিক্ষকতার জন্য নির্ধারিত যোগ্যতামান স্নাতক। সে-ক্ষেত্রে অনার্স ডিগ্রিধারীদের সাধারণ স্নাতক হিসেবেই গণ্য করার কথা।

হুঁশ ফিরতেই নড়েচড়ে বসেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। ফের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে বহু স্কুল। এই হয়রানির জন্য স্কুলশিক্ষা দফতরকেই দায়ী করেছেন অনেক প্রধান শিক্ষক। ‘‘এনসিটিই-র নিয়ম মেনে প্রথমেই পদক্ষেপ করলে এ ভাবে ভুগতে হতো না,’’ বলছেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Recruitment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE