Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
আইনের চোখে

উকিল যদি ঠকায়

সব মানুষ যেমন এক নন, সব উকিলও নন। অযথা মক্কেলকে হয়রান করার কুখ্যাতি আছে এঁদের কারও কারও। এঁদের জন্য কী দাওয়াই? জানাচ্ছেন দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৩১
Share: Save:

শত্তুরের নামে মামলা ঠুকেছেন। পাকড়েছেন জাঁদরেল উকিল। কিন্তু সে-ও তো এক ঝকমারি। উকিল খালি ঘোরায়। এই কাগজ দিন, সেই হলফনামা করুন। আজ কোর্টে আসুন, কাল চেম্বার। আর যত বার যাবেন, খালি ‘ফিজ দিন’। দুত্তোর, ঘেন্না ধরে গেল!

নালিশ জানাবেন কোথায়?

প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, আইনজীবীরা কিন্তু ক্রেতা সুরক্ষা আইনের আওতায় পড়েন না। কাজেই তাঁদের কাছে প্রাপ্য পরিষেবা না পেলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যাওয়া যায় না। তবে দু’টো রাস্তা খোলা আছে।

উকিল পাল্টে ফেলুন। আইনজীবীর কাজ মনঃপুত না হলে তাঁর সঙ্গে পরিষ্কার করে কথা বলুন। জানতে চান, কোথায় কেন সমস্যা হচ্ছে, কী ভাবে তার সুরাহা হবে। সদুত্তর না পেলে তাঁকে জানান যে, আপনি আইনজীবী বদল করতে চান। সে ক্ষেত্রে, ওই আইনজীবীর কাছ থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ নিতে হবে। তিনি তা দিলে ভাল। না দিলে সব জানিয়ে নতুন আইনজীবীর কাছে যাওয়া যায়। তিনিই আদালতকে বিষয়টি জানাবেন‌।

বার কাউন্সিলে নালিশ ঠুকুন। অ্যাডভোকেটস অ্যাক্ট ১৯৬১-এ আইনজীবীদের যোগ্যতা ও কর্তব্য স্পষ্ট করে দেওয়া আছে। তা মেনে চলতে প্রত্যেক আইনজীবী বাধ্য। অন্যথা হলে বার কাউন্সিলে নালিশ করা চলে। সত্যি বলতে, সারা বছরই এ রকম প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে।

বার কাউন্সিলের কী ক্ষমতা?

বার কাউন্সিল হল সেই কেন্দ্রীয় সংস্থা প্রত্যেক আইনজীবী যার সদস্য। বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অধীনে প্রত্যেক রাজ্যে স্টেট বার কাউন্সিল রয়েছে। সেখানে ‘ডিসিপ্লিনারি কমিটি’ আছে। নির্দিষ্ট ফর্ম ভর্তি করে কোনও আইনজীবীর বিরুদ্ধে নালিশ জানালে তারা বিচার করে। নোটিস দিয়ে দু’পক্ষকে ডেকে পাঠানো হয়। সাক্ষীসাবুদও থাকে দস্তুর মতো। উকিলমশাই দোষীসাব্যস্ত হলে সাজা পাবেন বৈকি!

কী সাজা হতে পারে?

শাস্তি হতে পারে তিন রকমের—

ক) আইনজীবীকে কিছু দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হতে পারে, সেই সময়টা তিনি আইন ব্যবসা করতে পারবেন না। ১৯৯৯ সা‌লের একটি মামলায় সাক্ষীকে প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আর কে আনন্দকে যেমন সাসপেন্ড করা হয়েছিল।

খ) অপরাধ গুরুতর হলে সদস্যপদই খারিজ করে দেওয়া হতে পারে, যাতে তিনি আর আইনজীবীর পেশাতেই থাকতে না পারেন।

গ) আইনজীবীর কারণে মক্কেলের আর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকলে ক্ষতিপূরণও দিতে বলা হতে পারে।

বার কাউন্সিলের রায় মনঃপুত না হলে?

স্টেট বার কাউন্সিলের রায়ে অসন্তুষ্ট হলে যে কোনও পক্ষই বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার দ্বারস্থ হতে পারে। তাদের বিচারও মনঃপুত না হলে গন্তব্য সুপ্রিম কোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE