Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আত্মসমর্পণ করুন গুরুঙ্গ, নির্দেশ দার্জিলিং জেলা আদালতের

বিনয়ের বক্তব্য, ‘‘পাহাড়বাসীকে বিভ্রান্ত করার দিন শেষ। তাঁরা শান্তি বজায় রেখে উন্নয়নের পক্ষে। কাজেই কেউ জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে সকালে-বিকেলে সুর পাল্টে সুবিধা করতে পারবেন না।’’

বিমল গুরুঙ্গ

বিমল গুরুঙ্গ

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫০
Share: Save:

সিআইডির আবেদনের ভিত্তিতে সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ-সহ মোর্চার প্রথম সারির একাধিক নেতাকে ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিল দার্জিলিং জেলা আদালত।

২৩ নভেম্বর বেলা সাড়ে দশটার মধ্যে আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে গুরুঙ্গ, তাঁর স্ত্রী আশা, রোশন গিরি, প্রকাশ গুরুঙ্গ, অমৃত ইয়ানজন ও অশোক ছেত্রীকে। এই সব নেতাই ফেরার। তাঁদের বাড়িতেও তাই নির্দেশ সেঁটে দেওয়া হবে। প্রশাসন ও আদালত সূত্রে খবর, যদি গুরুঙ্গরা আত্মসমর্পণ না করেন, তা হলে তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পথে এগোনো হতে পারে। এ দিনই গুরুঙ্গের আর এক ঘনিষ্ঠ নেতা অরু‌ণ ঘিসিঙ্গের স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক আমানতগুলি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিরিকের বাসিন্দা অরুণ মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। তাঁকেও আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তিনি তা না মানায় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ষাট ভাগই ডেঙ্গ২, মত নাইসেডের

কোণঠাসা এই পরিস্থিতিতে সুর নরম করেছেন গুরুঙ্গ। এ দিনই এক অডিও বার্তায় গুরুঙ্গ জানিয়ে দিলেন, তিনি পাহাড়ে রক্তারক্তি চান না। বরং, শান্তি বজায় রেখেই গোর্খাল্যান্ড আদায় করতে চান। বারবার ডেরা পাল্টে ঘুরতে ঘুরতে তিনি কিছুটা ক্লান্ত বলেও মনে করছেন মোর্চা নেতারা।

আগে গুরুঙ্গ জানিয়েছিলেন, ৩০ অক্টোবর দার্জিলিঙে প্রকাশ্যে আসবেন। এ দিনের বার্তাটিতে সে প্রসঙ্গ তিনি তোলেননি। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘গুরুঙ্গ এখন আর প্রশাসনকে নতুন করে কোনও চ্যালেঞ্জ ছোড়ার মতো জায়গায় নেই।’’ সে কারণেই তিনি বারবার শান্তির কথা তুলছেন বলেও পুলিশের মত। তবে গুরুঙ্গ বলছেন, ‘‘সব ঠিক থাকলে আমি দ্রুত দার্জিলিঙে জনতার মাঝে ফিরব। তত দিন পাহাড়ের কিছু নেতা, যাঁরা বিক্রি হয়ে গিয়েছেন, তাঁদের থেকে পাহাড়বাসী সতর্ক থাকতে হবে।’’ পুলিশের বিরুদ্ধে ফের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তিনি বলেছেন, ১৩ অক্টোবর সিংলার জঙ্গল থেকে যে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তা এক সময় কেএলও জঙ্গিদের কাছ থেকে পুলিশ পেয়েছিল, তা এখন মোর্চার অস্ত্র বলে চালানো হচ্ছে।

আলোচনাপন্থী মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপারা মনে করছেন, অস্থিরতা ছড়িয়ে পাহাড়ে কর্তৃত্ব কায়েম রাখতে ব্যর্থ হয়েই গুরুঙ্গ ভোল পাল্টে পায়ের তলার মাটি ফিরে পেতে চাইছেন। বিনয় শিবিরের বক্তব্য, অতীতেও পাহাড়ে বন্‌ধ-আন্দোলন চালিয়ে বিপাকে পড়ার পরে এক বার ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মায়ের মতো’ বলেছিলেন গুরুঙ্গ। কিন্তু, পরে ফের সুর চড়িয়েছিলেন। বিনয়ের বক্তব্য, ‘‘পাহাড়বাসীকে বিভ্রান্ত করার দিন শেষ। তাঁরা শান্তি বজায় রেখে উন্নয়নের পক্ষে। কাজেই কেউ জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে সকালে-বিকেলে সুর পাল্টে সুবিধা করতে পারবেন না।’’

তিন দিনের পাহাড় সফর সেরে ফেরার মুখে এ দিন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থও জানান, পাহাড়ের মানুষ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘সিংলার অভিযান নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। তা সফল ভাবেই হয়েছে। যদিও আমাদের এক সহকর্মী শহিদ হয়েছেন। বিমল গুরুঙ্গের হালহদিশ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE