নিজে জেলে বন্দি। ইদানীং তাঁর শরীরও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। এমনকী ‘তোলাবাজি’ নিয়ে সমস্যায় তাঁর দলের শরীরও যে ভালো নেই তা সোমবার অকপটে জানালেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র।
এ দিন আলিপুরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারকের এজলাসে তাঁর হাজিরা ছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়েই মদন মিত্র তোলাবাজির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। বলেন,‘‘তৃণমূলে তোলাবাজি এখন জটিল রোগের আকার ধারন করেছে।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রোগ যখন হয়েছে তখন চিকিৎসা প্রয়োজন তো? জবাবে মদনও বলেন, বেশ কড়া রকমের দাওয়াই দরকার। তাঁর মতে, ‘‘শুধু তোলাবাজি দমন করলে চলবে না, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচারও জরুরি।’’ তবে তিনি এও জানান, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আশা করছেন এক মাসের মধ্যেই তোলাবাজির সমস্যা মিটে যাবে। কারণ, যিনি মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোলাবাজি বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রী যখন কড়া বার্তা দিয়েছেন তাই তাঁর মনে হচ্ছে বেশি দিন এ সব চলবে না।
মদন মিত্রকে ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার ব্যাপারে এ দিন নির্দেশ দেন বিচারক। তার পরেই এজলাস থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী। তোলাবাজির প্রসঙ্গে উঠে আসে তখনই। এ ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়ে মদন জানান, তিনি আর কামারহাটির বিধায়ক নন ঠিকই। কিন্তু তাঁর কাছে খবর রয়েছে যে তাঁর একদা নির্বাচন কেন্দ্র কামারহাটিতে ইদানীং তোলাবাজির সমস্যা বেড়েছে। এবং তৃণমূলেরই কয়েকজন নেতা তোলা আদায় ও জুলুমের সব কাণ্ডে জড়িত রয়েছেন। বিষয়টি যে দলের ওপর তলার নেতাদের তিনি জানাবেন, সে বিষয়ে ইঙ্গিতও দেন মদন। তবে সেই সঙ্গে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশে পরামর্শ দিয়ে মদন বলেন, ‘‘দল আপনাদের টাকা তোলার অনুমতি দেয়নি। তাই দলের নাম করে টাকা তোলা অন্যায়। এটা করবেন না। আপনাদের টাকার প্রয়োজন হলে দলকে জানান। কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে আপনাদের সাহায্য করা হবে।’’
মদনের এ কথায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মদন যখন বলেছে, তখন জেলা থেকে খবর নেব। কামারাহাটিতেও তোলাবাজির অভিযোগ পেলে তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব।’’ জেলা নেতৃত্বের মতে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি দেওয়ার ভার তাঁদের হাতে নেই। শাস্তি দিতে পারেন রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বই। তাই, জ্যোতিপ্রিয় জানান, অভিযোগ পেলে তা দলের সভাপতি, মহাসচিব-সহ সংশ্লিষ্ট নেতৃত্বকেই জানাবেন। তাঁরাই ব্যবস্থা নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy