আলিপুর আদালতে মদন মিত্র।—নিজস্ব চিত্র।
কামারহাটি কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ানোর ব্যাপারে তিনি যে আশাবাদী, তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। কিছু দিন আগেই ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, সিবিআইয়ের চক্রান্তের জবাব দিতে কামারহাটি কেন্দ্রে তিনি মদনকেই প্রার্থী করবেন। নেত্রীর কথায় খুশি সারদা-কেলেঙ্কারিতে জেলবন্দি মদন বুধবার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘নির্বাচনে কামারহাটি থেকে লড়াই করার বিষয়ে দলীয় শীর্ষস্তর থেকে এখনও কোনও প্রস্তাব আসেনি। তবে আমি আশাবাদী।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ঝুলিয়ে নিলেই কামারহাটি কেন্দ্রের প্রার্থী ৫০ হাজার ভোটে জয়ী হবেন!’’
সারদা-কাণ্ডে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি মদনবাবু। আরও কয়েকটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়েছে। এমন এক নেতাকে আগামী বিধানসভা ভোটে শাসক দল প্রার্থী করবে কি না, গত কয়েক মাস ধরেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মদন গ্রেফতার হওয়ার পর একটা সময় পর্যন্ত দলনেত্রী এবং দল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছিল। পরে অবশ্য সেই মনোভাব অনেকটা বদলেছে।
এবং তার ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ মমতা। তাঁর অভিযোগ, সিবিআই তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের অকারণে হেনস্থা করছে। মদনও সেই অবিচারের শিকার। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়ে দেন, সিবিআইয়ের মুখের উপর জবাব দিতে কামারহাটি কেন্দ্রে তাঁর প্রার্থী হবেন মদনই।
নেত্রীর এই মনোভাব জানার পর থেকেই কামারহাটিতে মদন-ঘনিষ্ঠরা কার্যত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। প্রাক্তন মন্ত্রী নিজেই এ দিন বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকার নানা প্রান্তে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে শাসক দলের পক্ষে বিপুল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। কামারহাটির মানুষ শাসক দলের পক্ষেই রয়েছেন।’’
এ দিন আলিপুর আদালতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক সৌগত রায়চৌধুরীর এজলাসে হাজিরা ছিল মদনবাবুর। সেখানে তাঁকে ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এমন রায় যেন জানাই ছিল মদনবাবুর। তাই বিশেষ হেরফের দেখা গেল না চোখেমুখে। বরং ভোট এবং বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন নিজস্ব স্টাইলে। কামারহাটিতে দাঁড়ালে আপনি জিতবেন? মদনবাবুর উত্তর, ‘‘আমার উপর অবিচারের উপযুক্ত জবাব দিতে কামারহাটির মানুষ ইভিএম মেশিনকেই বেছে নেবেন। তৃণমূল প্রার্থী ৫০ হাজার ভোটে জিতবেন। মদন-ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, ‘‘দিদির ইচ্ছায় দাদাই প্রার্থী হচ্ছেন। আমাদের কাছে সেই রকম খবরই আছে।’’ আর বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘জোট নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। তৃণমূলের পাশেই মানুষ রয়েছেন। ফের ক্ষমতায় আসবেন মমতাই।’’
আলিপুর সংশোধনাগারে মদনের নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করা হয় বলে জানিয়েছে কারা দফতর। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুয়ায়ী তাঁর ভাত-রুটি খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আহার বলতে শুধুই সবজি সেদ্ধ আর দিনে চার লিটার জল। সম্প্রতি মদনবাবুর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বাপি করিমকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। ওই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সিবিআইয়ের সঙ্গে তদন্তের বিষয়ে সব রকম সাহায্য করছি। সিবিআই কী তদন্ত করছে, তা আমার জানার কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy