Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আন্তঃরাজ্য জাল নোট চক্রের পাণ্ডা গ্রেফতার

পুলিশ সূত্রের খবর, শহরে জাল নোট ঢোকার কথা জানতে পারেন এসএসপি়ডি-র অফিসারেরা। সেই সূত্রেই মজিদের সঙ্গে ক্রেতা সেজে যোগাযোগ তৈরি করেন তাঁরা। সোমবার রাতে সে কলকাতায় পৌঁছলে ১ লক্ষ ৭১ হাজার জাল নোট-সহ ওই ট্রাকচালককে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০৮
Share: Save:

বন্দর এলাকা থেকে জাল নোট উদ্ধারের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদ থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার বন্দর বিভাগের বিশেষ পুলিশ (এসএসপিডি)। ধৃতের নাম ওয়াসিম আহমেদ। ধৃতের বাড়ি ইলাহাবাদের করলি থানা এলাকার আমিনুদ্দিপুর ঘাউসনগরে। পুলিশের দাবি, সে জাল নোট পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতারের পরে তার বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালিয়ে জাল নোট ছাপার যন্ত্রও উদ্ধার করেছেন তদন্তকরারীরা। ধৃতকে শুক্রবার স্থানীয় ইলাহাবাদ আদালতে পেশ করা হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, শহরে জাল নোট ঢোকার কথা জানতে পারেন এসএসপি়ডি-র অফিসারেরা। সেই সূত্রেই মজিদের সঙ্গে ক্রেতা সেজে যোগাযোগ তৈরি করেন তাঁরা। সোমবার রাতে সে কলকাতায় পৌঁছলে ১ লক্ষ ৭১ হাজার জাল নোট-সহ ওই ট্রাকচালককে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। তার বাড়ি ইলাহাবাদে। সেখান থেকে ট্রাকে করে মাল নিয়ে আসার সময়ে ওই জাল নোট নিয়ে কলকাতায় আসত পেশায় ট্রাকচালক মজিদ। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে সে দাবি করে, কানপুরের এক ধাবায় ওয়াসিমের সঙ্গে আলাপ হয় তার। জাল নোট পাচারের জন্য ওয়াসিম তাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। এর পরেই এসএসপিডি-র গোয়েন্দারা তাকে নিয়ে ইলাহাবাদ হানা দেন। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (বন্দর) সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘ওয়াসিম ওই জাল নোট পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা। তার ঘর থেকে জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সামগ্রি উদ্ধার করা হয়েছে। কলকাতায় কোথায় কোথায় ওই জাল নোট পাচার করা হয়েছে, তার খোঁজ চলছে।’’

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে মজিদ তাঁদের নিয়ে যান ইলাহাবাদের করলিতে। সেখানে ওয়াসিমের অফিস রয়েছে। ওই অফিসে হানা দিয়ে ওয়াসিমকে পাকড়াও করেন গোয়েন্দারা। সেখান থেকে কম্পিউটার ও প্রিন্টার আটক করা হয়। এর পরেই সেখান থেকে ইলাহাবাদের আমিনুদ্দিপুর ঘাউসনগরে ওয়াসিমের বাড়িতে তল্লাশি চালান কলকাতা পুলিশের ওই দলটি। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় দু’টি পেনড্রাইভ এবং জাল নোট ছাপার কাগজ।

পুলিশের দাবি, ওয়াসিম একা নয়, ওই জাল নোট পাচার চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তবে ছাপার কাজ মূলত ওয়াসিম করত। পরে যা মজিদের মতো ক্যারিয়ারদের মাধ্যমে এই রাজ্য-সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হত। তবে তদন্তকারীরা জানান, অফসেটে ছাপা বলে ‘সিকিওরিটি থ্রেড’ নেই ওই জাল নোটে। সেই
সঙ্গে অফসেটে ছাপা হওয়ায় জাল নোটের ডান পাশে, নীচের দিকে টাকার মূল্য লেখার গায়ে খরখরে ভাবটিও অনুপস্থিত।

প্রাথমিক তদন্তে ওয়াসিমকে জেরা করার পরে তদন্তকারীরা জানান, ইলাহাবাদের করলির ওই ডিটিপি-র দোকানের আড়ালে জাল ৫০০ ও ১০০ টাকার নোট ছাপানো হত। ছাপানোর পরে তা নিয়ে চলে যাওয়া হতো বাড়িতে। সেখানে কাউটিং হত জাল নোটের। পরে তা বান্ডিলে বেঁধে বিভিন্ন এলাকায় ক্যারিয়ারের হাত তুলে দেওয়া হত। জাল নোট পৌঁছে দিলে মোট মূল্যের অর্ধেক কমিশন হিসেবে পেত ক্যারিয়ারেরা। ওই চক্রটি এর আগে দু’বার কলকাতায় জাল ভারতীয় নোট পাচার করেছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake Currency Fake Currency Ring
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE