—ফাইল চিত্র।
মাতৃভূমি লোকাল নিয়ে এমনিতেই জেরবার রেল-পরিষেবা। তার মধ্যে এ দিন আবার দু’টি ট্রেন মুখোমুখি হয়ে গেল দমদমে! তাই নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ালেও শেষমেশ দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। দমদম স্টেশনে ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ।
রেল কর্তারা জানিয়েছেন, পয়েন্ট ভুল সেট হওয়ায় দু’টি ট্রেন মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিল। পরে জানা যায়, রেলের লোকজনের ভুলেই এই বিপত্তি। যার জেরে পাঁচ জনকে সাসপেন্ড করেছেন জেনারেল ম্যানেজার।
পয়েন্ট সেট করার অর্থ কী?
এক লাইন থেকে অন্য লাইনে ট্রেন যাওয়ার জন্য একটি বিশেষ পয়েন্ট ঠিক করতে হয়। তা না হলে ট্রেন ভুল লাইনে চলে যেতে পারে। পয়েন্ট ভুল হলে সিগন্যালও ভুল হয়। এ যাত্রা দুর্ঘটনা এড়ানো গেলেও ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’টি ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। যাত্রীরা স্টেশনে নেমে ইটপাটকেল মারতে শুরু করেন। উত্তেজিত জনতার একাংশ স্টেশনে ভাঙচুরও করে বলে অভিযোগ। আরপিএফ এসে ঠেকাতে গেলে তাদের সঙ্গেই যাত্রীদের হাতাহাতি বেধে যায়। পরে অবশ্য আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দমদমে যখন এই ঘটনা ঘটছে সেই সময় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন। সেখানে অবশ্য এই প্রসঙ্গ ওঠেনি। রেল কর্তারা বিষয়টি রেলমন্ত্রীকে জানাননি।
ঠিক কী হয়েছিল এ দিন?
রেল সূত্রের খবর, রাত ৮টা নাগাদ দমদম স্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আপ রানাঘাট লোকাল দাঁড়িয়েছিল। আচমকাই ওই লাইনে ডাউন ডানকুনি লোকাল চলে আসে। প্রায় মুখোমুখি হয়ে যায়। আতঙ্কে তখন দু’টি ট্রেনের যাত্রীই প্ল্যাটফর্মে নেমে পড়েন। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। এর মাঝেই উত্তেজিত যাত্রীদের একাংশ লাইন থেকে পাথর তুলে ছুড়তে শুরু করেন। কেউ কেউ স্টেশনে ভাঙচুরও করতে শুরু করেন। ছুটে আসে আরপিএফ। তারা লাঠি উঁচিয়ে যাত্রীদের তাড়া করলে আগুনে ঘি পড়ে। পরে অবশ্য পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে আরপিএফ।
রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে গোলমাল বাধিয়েছেন। তাঁরা হাঙ্গামা না করলে কিছুই হত না। কারণ চালকরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেছেন, ‘‘সিগন্যাল খারাপ হওয়ায় এ দিন প্রায় দু’ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছে।’’
অফিসের ব্যস্ত সময়ে এই ঘটনা ঘটায় এ দিন শিয়ালদহ মেন লাইনে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে শিয়ালদহের মেন, ডানকুনি ও বনগাঁ শাখার সব ট্রেনই দেরিতে চলেছে। সাড়ে ৯টার পরে সিগন্যাল মেরামত করা গেলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে বেশ রাত হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy