Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্বজ্জনদের নিয়ে মমতার ‘আড্ডা’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘণ্টা দুয়েকের এই বৈঠককে নিছক গান-গল্পের ঘরোয়া আড্ডা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হলেও সাম্প্রতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে সমাজের বিভিন্ন স্তরের পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই সময় কাটানোকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪
Share: Save:

দীর্ঘদিন বাদে শিল্পী শুভাপ্রসন্নের উদ্যোগে বিদ্বজ্জন বৈঠকে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘণ্টা দুয়েকের এই বৈঠককে নিছক গান-গল্পের ঘরোয়া আড্ডা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হলেও সাম্প্রতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে সমাজের বিভিন্ন স্তরের পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই সময় কাটানোকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ জানুয়ারি আইসিসিআরএ বিবেকানন্দ সম্পর্কিত একটি আলোচনাসভায় বিজেপিও চাইছে কিছু বিদ্বজ্জনকে হাজির করাতে।

শুভাপ্রসন্নর সল্টলেকের বাড়িতে এ দিনে বৈঠকের প্রস্তুতি চলেছে বেশ কিছুদিন ধরে। কাদের ডাকা হবে, সে ব্যাপারে মমতা নিজেও মতামত দিয়েছেন। অনেকের মতে, বিজেপি যে ভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে, তাতেই এ দিনের বৈঠকের প্রয়োজনীয়তা বেশি করে উপলব্ধি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

এর আগে কলকাতায় এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মহাজাতি সদনে বিদ্বজ্জন সম্মেলন করেছিলেন। তবে সেখানে ‘বিদ্বজ্জন’দের উপস্থিতির হাল দেখে তিনি বিশেষ সন্তুষ্ট হননি। সে কথা তিনি দলে জানিয়েও গিয়েছেন। সম্প্রতি কলকাতায় এসে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সঙ্গীতশিল্পী রাশিদ খানের বাড়িতে গিয়েছিলেন। শিল্পীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। মুখে কেউ কিছু না বললেও তৃণমূলের অন্দরে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে চর্চা হয়। এবং আরএসএস–প্রধান মুখ্যমন্ত্রীর ‘স্নেহভাজন’ শিল্পীর বাড়িতে চলে যাওয়ায় কিছু প্রশ্নও ওঠে।

এমন এক বাতাবরণে শুভাপ্রসন্নর বাড়ির বৈঠকে যত বেশি সম্ভব ‘ঘনিষ্ঠ’ বিদ্বজ্জনদের উপস্থিতি নিশ্চিত করানোর চ্যালেঞ্জও সামনে ছিল। সে দিক থেকে এই বৈঠক অনেকটাই সফল। কারণ মমতার বৃত্তে যাঁদের নিয়মিত দেখা যায়, তাঁরা প্রায় সকলেই এ দিন হাজির ছিলেন। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে এ দিন অনুপস্থিত শাঁওলি মিত্র। দিন কয়েক আগেই বাংলা আকাদেমির সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। সরকার তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেনি। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল থেকে বলা হয়েছে, এ দিন শারীরিক কারণে তিনি এই বৈঠকে থাকতে পারেননি।

২০১১ সালে পরিবর্তনের আগে রাজ্যের বিদ্বজ্জনদের একসঙ্গে নিয়ে মমতার পাশে দাঁড়ানোর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন শুভাপ্রসন্ন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আবার কি তা ‘ঝালিয়ে’ নেওয়া হচ্ছে? এ প্রশ্নে শুভাপ্রসন্ন বলেন, ‘‘ঝালিয়ে নেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। অনেক দিনের চেনা মানুষদের সঙ্গে বসে আড্ডা হল। মানুষই বুঝে পরিবর্তন চেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিয়েছিল। তারা যতদিন বুঝবেন, ওঁকেই ভোট দেবেন।’’

তৃণমূলের এই বৈঠকের পরেই বিজেপিও যে ভাবে বিদ্বজ্জনদের নিয়ে সম্মেলন করতে চাইছে, তাতে রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট। বিজেপির নববঙ্গ শাখার ওই সম্মেলনে দলের নেতা-সাংসদের বাইরে ‘অরাজনৈতিক’ বিদ্বজ্জন কারা আসেন, সে দিকে তৃণমূলও নজর রাখছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE