Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তারদের শো-কজ করায় ধমক মুখ্যমন্ত্রীর

গত শনিবার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী  ও পার্থ চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৮
Share: Save:

একসঙ্গে ২০ জন ডাক্তারকে শো-কজ করায় জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকারকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সোমবারই রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের নির্দেশে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালের ওই ২০ জন চিকিৎসককে শো-কজ করেছিলেন জগন্নাথবাবু।

বুধবার উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ক্ষমতা আছে বলে অভিযোগ পেয়েই শো-কজ করে দেব, শাস্তি দেব এটা হতে পারে না। আগে দেখতে হবে অভিযোগের সারবত্তা কতটা? যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হবে। শুনতে হবে। তার পরে তো শো-কজ। এটা ঠিক হয়নি।’’

মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব বোঝার পরেই বিকেলে জলপাইগুড়ি ফিরে রাতারাতি শো-কজ নোটিস প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জগন্নাথবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সব জানিয়ে দিয়েছি। সকলেই একযোগে কাজ করছেন ও করবেন। আমিও খুশি।’’

গত শনিবার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা৷ তখনই বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তাঁরা গাফিলতির নালিশ পেয়েছিলেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁরা ফিরে যাওয়ার পর গত সোমবার একসঙ্গে ২০ জন চিকিৎসককে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে শো-কজ করেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

বুধবার উত্তরকন্যার প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন প্রসঙ্গটি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানতে চান, “কী এমন হয়েছিল যে এতজন চিকিৎসককে একসঙ্গে শো-কজ করা হয়েছে?” উত্তরে জগন্নাথবাবু বলেন, “ম্যাডাম, কাজের ব্যাপারে অভিযোগ ছিল।’’ যা শুনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “তাদের পারফরমেন্সটা কে ঠিক করবে, আপনি, না অন্য কেউ?’’ এর উত্তরে সিএমওএইচ বলেন, ‘‘জানি না, ম্যাডাম৷ আমায় করতে বলা হয়েছিল৷” এরপরই রীতিমতো ধমকের সুরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আপনাকে করতে বলা হল আর আপনি করে দিলেন। বাহ্!” উত্তরে সিএমওএইচ বলেন, “আমায় ২০ জনকে শো-কজ করার কথা স্বাস্থ্য কর্তারা বলে দিয়েছিলেন, ম্যাডাম৷”

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে দেখে নেবেন সেটা নিরপেক্ষ হচ্ছে কি না৷ কেউ কাজে গাফিলতি করলে তাকে আগে ভাল করে কাজ করতে বলুন৷ তারপর ব্যবস্থা নিন৷ সবাইকে শো-কজ করে দিলে হাসপাতাল চালাবেন কী করে? যাদের শো-কজ করেছেন তাদের ভাল করে কাজ করতে বলুন৷ তাদের গায়ে যেন কালো কালির দাগ না লাগে৷”

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে উচ্ছ্বসিত জলপাইগুড়ি জেলার চিকিৎসক মহল৷ আইএমএ-র সদস্য কমলেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই নির্দেশের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ৷’’ অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্সের জলপাইগুড়ি শাখার সম্পাদক স্বস্তিশোভন চৌধুরী বলেন, ‘‘একসঙ্গে এতজন চিকিৎসককে শো-কজ কখনই কাম্য নয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE