Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মন্ত্রী-সচিব সংঘাতে অমিতের পাশে মমতা

প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, সংযুক্ত শিল্প দফতর কাজ শুরুর পর থেকে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে শিল্পসচিবের ব্যক্তিত্বের লড়াই শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন, মন্ত্রী-সচিব দু’জনে মিলেমিশে কাজ করুন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

গত মার্চ মাসে শিল্প-বাণিজ্য এবং ছোট ও ক্ষুদ্র শিল্প দফতর মিশিয়ে সংযুক্ত শিল্প দফতর গড়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। শিল্পসচিব পদে বসানো হয়েছিল বর্ষীয়ান আমলা রাজীব সিংহকে। ঠিক ছ’মাসের মাথায় সেই মন্ত্রিসভার বৈঠকেই ফের ভেঙে দেওয়া হলো শিল্প দফতর। সরিয়ে দেওয়া হলো রাজীব সিংহকেও।

প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, সংযুক্ত শিল্প দফতর কাজ শুরুর পর থেকে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে শিল্পসচিবের ব্যক্তিত্বের লড়াই শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন, মন্ত্রী-সচিব দু’জনে মিলেমিশে কাজ করুন।

কিন্তু মতানৈক্য ক্রমে সংঘাতের চেহারা নেওয়ায় মন্ত্রিসভাকে ‘পুর্নমুষিক ভব’ নীতি নিতে হয়েছে। ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প দফতর আলাদা করে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজীববাবুকে। আর শিল্প-বাণিজ্য দফতরের সচিব করা হয়েছে এস কিশোরকে। লগ্নি আনতে না পারার অভিযোগে ২০১৫ সালে যাঁকে বদলি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের মার, দাঁড়িয়ে দেখল পুলিশ

কিন্তু সংঘাত চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছল কেন? নবান্নের খবর, ২০১৮ সালের বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনের জন্য সহযোগী সংস্থা বাছাইয়ের কাজ দরপত্র চেয়ে করতে চেয়েছিলেন শিল্পসচিব। ২০১৭ সালের সম্মেলনে খরচ হয়েছিল প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এ বার খরচ কিছুটা বাড়ার কথা। সরকার পরিকল্পনা জানিয়ে দরপত্র চেয়ে এগোক, এমনই প্রস্তাব দেন রাজীববাবু। তাতে সায় ছিল না মন্ত্রীর। তিনি একটি বণিকসভাকে দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এতে শিল্প সম্মেলন সংক্রান্ত খবরাখবর বাইরে আসবে না। এ নিয়ে মন্ত্রী-সচিব মন্ত্রীর বিরোধ চরমে ওঠে। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীর ইচ্ছামতো দরপত্র ছাড়াই এক বণিকসভাকে সহযোগী সংস্থা নিয়োগ করা হচ্ছে।

নবান্নের খবর, উৎসাহ ভাতা প্রকল্পে শিল্পস্থাপনে আগ্রহী সংস্থাগুলির প্রাথমিক পঞ্জিকরণও বন্ধ ছিল। এ নিয়ে বিস্তর ফাইল চালাচালিও হয়। মন্ত্রীর মতামত উপেক্ষা করে প্রায় ৮০টি সংস্থাকে প্রকল্পে নাম লেখানোর ব্যবস্থা করেন সচিব। গোলমাল হয় শিল্প উন্নয়ন নিগমের কাজকর্ম নিয়েও।

নবান্নের অনেকে আবার জানাচ্ছেন, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা না-করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সচিব। শিল্পমন্ত্রী এমনই কিছু বিষয় নজরে আনলে বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনের আগে সংঘাত আর বাড়াতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। দ্রুত দফতর ভাগ করে শিল্প দফতর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রাজীববাবুকে। তবে এ নিয়ে শিল্পমন্ত্রী বা বিদায়ী শিল্পসচিবের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা কেউ মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE