প্রহরা: কড়া পাহারায় মুক্তি পেল পদ্মাবত। বুধবার শহরের একটি মলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
সব মেঘেই রুপোলি রেখা থাকে। দেশ জুড়ে সাংস্কৃতিক দুর্যোগের মেঘে সেই ব্যতিক্রমী রেখা হয়ে থাকল বাংলা।
পাহারা, নজরদারিতে অবশ্য ঘাটতি রাখেনি পুলিশ। গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানায় গোলমালের জেরে আশঙ্কা থেকেই পাহারাদারির ছক কষা হয়েছিল।
দেশ জুড়ে ‘পদ্মাবত’-এর মুক্তি আজ, বৃহস্পতিবার। বুধবার সন্ধ্যায় দেশের প্রধান সব মাল্টিপ্লেক্সে ছবিটির থ্রি-ডি সংস্করণ মুক্তি পেল। নবান্নে বিকেলেই ‘পদ্মাবত’ নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে ছবিটি নিয়ে কোনও বাধা নেই। বজরং দল এটা (গোলমাল) করছে। যারা হাঙ্গামা করছে, বিজেপির উচিত তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা।’’ আসানসোলের মুর্গাশোলের ইদগা মোড়ে ছবিটি বন্ধ করার দাবিতে এ দিনই সভা করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তবে পুলিশ আত্মবিশ্বাসী, বাংলায় ছবিটির অবাধ প্রদর্শনে অসুবিধা হবে না।
সন্ধ্যায় শো শুরুর ঢের আগেই শহরের সব মাল্টিপ্লেক্সের ভিতরে-বাইরে দেদার পুলিশ। তৈরি ছিল প্রিজন ভ্যান। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার থেকে নিচু তলার পুলিশকর্মী— সকলে শশব্যস্ত। গোলাপি টি-শার্ট, জিন্স, স্নিকার্সের সাজে এক পুলিশ অফিসার এক মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে দাঁড়িয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের বললেন, ‘স্যার, আমি বরং ভিতরে থাকি।’ যদি হলে ঢুকে কেউ পতাকা বার করে স্লোগানবাজি, হট্টগোল শুরু করে দেয়! তাই সাদা পোশাকের পুলিশ।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে উন্মত্ত করণী সেনা, চার রাজ্যে মাল্টিপ্লেক্সে বন্ধ প্রদর্শনী
মূল রিলিজের আগের দিন থ্রি-ডি সংস্করণের মুক্তিকে বলা হয় ‘পেড রিলিজ’। এই বিষয়টি চাউর করতে তত তৎপরতা ছিল না। তবে দেখা গেল, বেকবাগানের মাল্টিপ্লেক্সের সব থেকে ব্যয়বহুল প্রেক্ষাগৃহেও টিকিট ভালই বিক্রি হচ্ছে। পিভিআর, অ্যাক্রোপলিস বা আইনক্স-সহ সর্বত্র বেশি রাতের শো-এও ‘পদ্মাবত’ দেখার আগ্রহ যথেষ্ট। ‘‘বৃহস্পতিবার মুক্তির পরে সামনে ২৫ জানুয়ারি থেকে উইক-এন্ড এ বার বেশ দীর্ঘ। তাই মনে হচ্ছে, ছবিটি ভালই ব্যবসা করবে,’’ বললেন আইনক্সের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলায় ১৩০টা হলে ছবিটির মুক্তি পাওয়ার কথা।
বেকবাগানের মলে দীপিকা পাড়ুকোনের সাবেক গয়না দেখে মুগ্ধ অলঙ্কার বিপণির কর্ত্রী নন্দিতা রাজা। তিনি বললেন, ‘‘আগেই মনে হচ্ছিল, অন্যত্র ছবিটির মুক্তি নিয়ে গোলমাল চললেও বাংলায় রিলিজ করে দিক!’’ ‘‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটা জরুরি দিক। অপসংস্কৃতির তকমা শিল্পীর গায়ে বসানোর জ্বালা আমি বুঝি! তাই পদ্মাবতের পাশে আছি, থাকব,’’ বললেন প্রথম দিনের শো-এর আর এক দর্শক উষা উত্থুপ।
নিশ্চিন্তে ছবি চলার ছবিটা বলে দিল, কলকাতা আছে কলকাতাতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy