দুর্গতদের ত্রাণ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাড়ে ৪ ঘণ্টা রাস্তা অতিক্রম করে বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরিক পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিরিক যাওয়ার রাস্তা ধসে বন্ধ থাকায় শিলিগুড়ি-দার্জিলিঙ দিয়ে ঘুরে অন্য একটি পথ দিয়ে সেখানে পৌঁছন তিনি। পথে সুখিয়াপোখরিতে একটি ত্রাণ শিবিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ৩০ জনকে ত্রাণ দেন। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে মাথাপিছু ৪ লক্ষ টাকা এবং আহতদের এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যতদিন না দুর্গতেরা নিজের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেন, তাঁরা শিবিরেই থাকবেন। তাঁদের সমস্ত রকম সহযোগিতা করবে প্রশাসন।
ধসে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মিরিকের টিংলিং এবং সৌরিনি এলাকাতে ত্রাণ পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে এ দিন থেকে। যদিও বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ দার্জিলিং থেকে আট কিলোমিটার দূরে নিমাটিঝোরায় ফের ধস নামায় আটকে গিয়েছে অসংখ্য গাড়ি। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ত্রাণের গাড়িও রয়েছে। গাড়িগুলি দার্জিলিং থেকে ত্রাণ নিয়ে মিরিকের দিকে যাচ্ছিল। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
টিংলিং চা বাগানে খোলা হয়েছে একটি ত্রাণ শিবির। এখানে ১০০০ জন দুর্গতকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সৌরিনি চা বাগানের অফিসে এবং সৌরিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও দু’টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এই দু’টিতে প্রায় পাঁচশো মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। গোটা ত্রাণ ব্যবস্থার তদারকি করছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) এবং রাজ্য সরকার। ব্লক প্রশাসনের তরফে পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন বিডিও। জিটিএ-এর অন্যতম শীর্ষ নেতা বিনয় তামাং এ দিন বলেন, ‘‘যত ক্ষণ না বিপদ কাটছে তত ক্ষণ ধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এই শিবিরগুলিতেই থাকবেন।’’ প্রশাসনের তরফে মোট তিন বার খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সকালে শুকনো খাবার। দুপুর ও রাতে খিচুড়ি অথবা ভাত, ডাল, তরকারি থাকছে। চা বাগানগুলি থেকে পানীয় জলের যোগান দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ব্লক প্রশাসন মিরিক শহর থেকে জলের ট্যাঙ্কার আনাচ্ছে।
পরিবারের হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন।
মিরিকের তুলনায় কম ক্ষতিগ্রস্ত কালিম্পং। তবে এখনও কোনও ত্রাণ শিবির খোলা হয়নি সেখানে। কালিম্পং-এর ১১ মাইল, ২৯ মাইল, পেডং এলাকায় ধস নামায় ইতিমধ্যেই ছ’জনের প্রাণহানি হয়েছে। টিংলিং এবং সৌরিনির মতো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এখানে বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রায় ৪০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে নজরদারি চলছে। ধস নেমে রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় ত্রাণ আনা নেওয়ার কাজেও সমস্যা হচ্ছে।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy