Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নামে চেয়ার চান মমতা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চেয়ার প্রফেসরের পদ সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কোয়ান ইউ-এর নামে তৈরির প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সিঙ্গাপুরের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই লি সিয়েন-এর বাবার নামে চেয়ার তৈরির প্রস্তাব দেন তিনি। প্রস্তাবে লি সিয়েন আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজি কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

নতুন শুরু। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

নতুন শুরু। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গাপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪৮
Share: Save:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চেয়ার প্রফেসরের পদ সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কোয়ান ইউ-এর নামে তৈরির প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আজ সিঙ্গাপুরের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই লি সিয়েন-এর বাবার নামে চেয়ার তৈরির প্রস্তাব দেন তিনি। প্রস্তাবে লি সিয়েন আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজি কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে বৈঠকের পরে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর দাবি, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে, আর তো কোনও সমস্যা নেই। যে ভাবে স্বামীজি-নেতাজির নামে চেয়ার হয়েছে, সেই ভাবেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে লি কোয়ান ইউ-এর নামেও একটি চেয়ার হবে। দু’দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে পড়াশোনা ও গবেষণা চলবে।”

একটি শিল্প-বাণিজ্য সফরের মধ্যে এক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অন্য একটি রাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কের নামে চেয়ার প্রফেসর তৈরির কথা ঘোষণা করছেন, এমন ঘটনা খুব প্রচলিত নয় অবশ্য। শিক্ষাজগতের অনেকেই জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ার প্রফেসর পদ তৈরি এবং নামাঙ্কনের ক্ষেত্রে সাধারণত দু’রকম রীতি দেখা যায়। প্রথমত, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-চিন্তানায়কদের নামে চেয়ার তৈরির চল রয়েছে। কখনও নতুন পদ তৈরি করে বিশিষ্টদের নামে নামকরণ করা হয়, কখনও বা চালু পদেরই একটিকে বেছে নতুন নাম দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, দুনিয়া জুড়েই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুদানদাতাদের নামে গবেষণা কেন্দ্র, চেয়ার প্রফেসর পদ চালু রয়েছে। দাতারা সবাই যে শিক্ষাজগতের জো্যতিষ্ক, তা নয়। কিন্তু তাঁদের অনুদানের স্মারক হিসেবে তাঁদের বা তাঁদের সংস্থার বা পরিবারের কারও নামে চেয়ার রয়েছে। উন্মুক্ত অর্থনীতির জমানায় এই রীতি জনপ্রিয় হচ্ছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নামে চেয়ার হলে তার গুরুত্ব কোথায়? শিক্ষাজগতের মত হলো, বাণিজ্য সম্পর্কের বিস্তার, পারস্পরিক আদানপ্রদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে একে দু’দেশের মধ্যে শুভেচ্ছা-বার্তা হিসেবে দেখতে হবে। সাধারণ ভাবে এই জাতীয় চেয়ার-এর জন্য আর্থিক অনুদান জুগিয়ে থাকেন যাঁর নামে চেয়ার সেই দেশের কোনও সরকারি বা অসরকারি সংস্থা। অথবা সেই দেশে বসবাসরত অনাবাসীরাও এ সব ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এই জাতীয় চেয়ার-এর মধ্য দিয়ে তাঁরা নিজেরা দু’দেশের মধ্যে সংযোগ-রক্ষকের কাজ করেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে লি কোয়ান ইউ-এর নামে চেয়ার হলে তার অনুদান কি সিঙ্গাপুরের কোনও সংস্থা বা সিঙ্গাপুরের বাঙালি অনাবাসীরা জোগাবেন? প্রশাসন সূত্রে কিন্তু খবর, রাজ্য সরকার নিজের খরচে লি কোয়ান ইউ-এর নামে চেয়ার গড়বে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে বলেন, “দেশে একমাত্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েই ইনস্টিটিউট অব ফরেন পলিসি স্টাডিজ রয়েছে, যেখানে বিদেশ মন্ত্রক অনুদান দেয়। ভারত সরকার চায়, সেখানে গবেষণার ক্ষেত্রে ‘পুবে তাকাও’ নীতিকে যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নামে চেয়ার পেলে ওই কেন্দ্রে গবেষণার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE