Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঝুঁকি নয়, তাই আর বুকিং নয় পাহাড়ের হোটেলে

অশান্তি চলতে থাকায় মঙ্গলবার প্রায় পর্যটকহীন হয়ে পড়েছে দার্জিলিং। এ দিন সকাল থেকে কয়েক দফায় চকবাজার-সহ দার্জিলিং শহরে উত্তেজনা চলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন হোটেল কর্তৃপক্ষও। বুকিং থাকা পর্যটকদেরও ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

ফাঁকা: শিলিগুড়ির টিকিটের কাউন্টারে উধাও ভি়়ড়। মঙ্গলবার এসপ্লানেডে। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা: শিলিগুড়ির টিকিটের কাউন্টারে উধাও ভি়়ড়। মঙ্গলবার এসপ্লানেডে। নিজস্ব চিত্র

অনির্বাণ রায়
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৩:৩৬
Share: Save:

দুপুর একটায় সুনসান রাজভবন লাগোয়া এলাকার একটি অভিজাত হোটেল। রেস্তোরাঁ বন্ধ, পানশালার দরজা সকাল থেকে খোলেনি। কটেজগুলির দরজায় তালা। মরসুম থাকুক অথবা না থাকুক, দিনভর সরগরম থাকাই এই হোটেলের অভ্যাস। গত সোমবার থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ নতুন বুকিং নেওয়া বন্ধ রেখেছে। মঙ্গলবার দুপুরে হোটেলের এক কর্মীর মন্তব্য, ‘‘কিছুই আর আগের মতো নেই।’’

অশান্তি চলতে থাকায় মঙ্গলবার প্রায় পর্যটকহীন হয়ে পড়েছে দার্জিলিং। এ দিন সকাল থেকে কয়েক দফায় চকবাজার-সহ দার্জিলিং শহরে উত্তেজনা চলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন হোটেল কর্তৃপক্ষও। বুকিং থাকা পর্যটকদেরও ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। জিমখানা লাগোয়া একটি হোটেল কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও ঝুঁকি নেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।

হোটেল ব্যবসায়ীরা অনেকে মনে করেন, পর্যটকদের নিয়ে সুর নরম করলেও বাস্তবে তার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টে দার্জিলিং জুড়ে মোর্চার মিছিল হচ্ছে। পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটছে। এর ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন পর্যটকরা। সকাল থেকে পুলিশ পাহারায় বাস এবং ছোট গাড়িতে শতাধিক পর্যটক দার্জিলিং ছেড়েছেন।

খেলা: বন্‌ধের দিন দার্জিলিঙের রাস্তায়। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

উপরন্তু, চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চের ডাকা সাধারণ ধর্মঘট সমর্থন করলেও মোর্চা-কর্মীরা পথে নামবেন না বলে দাবি করেছিলেন নেতারা। কিন্তু, এ দিন ডিএম অফিসের সামনে মোর্চার মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। গোলমালের সময়ে চকবাজারে ছিলেন বেঙ্গালুরুর পর্যটক রাকেশ ইয়ুলের পরিবার। মহিলারা ভয়ে একটি ওষুধের দোকানে ঢুকে পড়েন। রাকেশবাবু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরকারি বাসে শিলিগুড়ি নেমে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন:সর্বদলে কিছু স্বস্তি, কিছু কাঁটা

লুধিয়ানা থেকে সোমবার দার্জিলিং এসেছিলেন বিনোদ কুমার। সঙ্গে দুই মহিলা, দুই শিশু-সহ সাত জন। এ দিন বিকেলেই পাহাড় ছাড়তে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু গাড়ি পাচ্ছিলেন না। বিনোদের স্ত্রী পুনম বলেন, ‘‘বাইরে গোলমাল। ভিতরে বাচ্চারা ভয়ে কাঁদছে। হোটেলে বন্দি থেকে আতঙ্কে কাটাচ্ছি।’’

এইচডি লামা রোডের এক হোটেলের ম্যানেজার দাবি করলেন আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত ১৯টি ঘরই বুকড ছিল। এ দিন সকালে দু’দল পর্যটক চলে যাওয়ার পরে হোটেল ফাঁকা। আপাতত কয়েক দিনের জন্য বুকিং না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ম্যানেজার বলেন, ‘‘এই মরসুমে আর পর্যটক পাব না। আগামিকাল থেকে রাঁধুনি ও কর্মীদের ছুটি দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE