Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Adulterated meat

মাংস-রটনায় পুলিশ শরণে নামী বিপণি

কলকাতার গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, জেরার মুখে ওই ব্যক্তি কবুল করেছেন, তিনি এক জনের কাছ থেকে এই ধরনের বার্তা পেয়ে সেটি ছড়িয়ে দিয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ১৭:৪৫
Share: Save:

কিছু সংস্থা নিয়মিত ভাগাড়ের মাংস ব্যবহার করত বলে জানাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া! ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে সেই সব রেস্তরাঁ ও বিপণির নাম উল্লেখ করে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে, উপভোক্তারা যেন ওই সব দোকান ও রেস্তরাঁ থেকে মাংস বা মাংসজাত কোনও খাবার না-কেনেন।

এতে বিপাকে পড়েছে অনেক নামীদামি রেস্তরাঁ ও বিপণি। এতটাই যে, এক কেক-পেস্ট্রি-পিৎজা-বার্গার বিপণি এই নিয়ে কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখায় অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগ, কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তাদের নামে এই ধরনের ভয়ঙ্কর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তার জেরে মার খাচ্ছে তাদের ব্যবসা। অভিযোগের তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যে এক ব্যক্তিকে ডেকে জেরা করেছে। কলকাতার গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, জেরার মুখে ওই ব্যক্তি কবুল করেছেন, তিনি এক জনের কাছ থেকে এই ধরনের বার্তা পেয়ে সেটি ছড়িয়ে দিয়েছেন।

‘‘কে বা কারা প্রথম এই বার্তা ছড়িয়েছিল, তা বার করার উপায় আমাদের জানা আছে। একটু সময় লাগলেও আমরা ‘ব্যাক ক্যালকুলেশন’ করে তা জেনে যাব,’’ দাবি গোয়েন্দা-প্রধানের। অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে পারলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ আনা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

ইদানীং দেখা যাচ্ছে, কোনও বিতর্কিত বিষয় খবরের শিরোনামে চলে এলে তা নিয়ে অতি দ্রুত সক্রিয় হয়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়া। মেট্রোর ভিতরে যুগলের ঘনিষ্ঠতা এব‌ং তার পরে তাঁদের মারধরের ঘটনা এর সাম্প্রতিকতম উদারহরণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার হাজার মানুষ নিজের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ পাচ্ছেন। ভাগাড়ের মাংস নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরেও একই ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। ভাগাড় নিয়ে বন্যা বয়ে যাচ্ছে চুটকি, কবিতা, মজাদার ছড়ার। তা ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে।

তার পরেই প্রথমে কেক-পেস্ট্রির ওই বিপণি নিয়ে শুরু হয় চর্চা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়া বার্তায় বলা হয়, ভাগাড়ের মাংস নিয়ে যে-সব অসাধু ব্যবসায়ী টাকা রোজগারে নেমেছেন, তাঁদের অনেকে ‘নাকি’ স্বীকার করেছেন যে, তাঁরা ওই বিপণিতে ‘কুচো মাংস’ সরবরাহ করতেন। জানতে পেরে পাল্টা সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিপণির কর্তারা। তাঁরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, যাঁরা এই কুৎসা রটাচ্ছেন, পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাঁদের খুঁজে বার করে শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

এর পরে উপভোক্তাদের সতর্ক করে দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরতে শুরু করে কলকাতার ১১টি রেস্তরাঁর নাম, যাদের মধ্যে কয়েকটির বেশ নামডাক রয়েছে। তাদের তরফেও কেউ কেউ প্রতিবাদ করার জন্য বেছে নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াকেই। শরৎ বসু রোডের এমনই এক রেস্তরাঁর ম্যানেজার কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চলতে থাকায় তাঁরাও মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কোথা থেকে তাঁরা মাংস কেনেন, রান্না হয় কী ভাবে— সবই জানানো হয়েছে পুলিশকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adulterated meat Meat মাংস
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE