প্রতীকী ছবি।
শুক্রবার মাঝরাতের বিস্ফোরণ এবং তার পরে মোর্চা সভাপতির বিরুদ্ধে ইউএপিএ। শনিবার আবার হ্যান্ড গ্রেনেড হামলায় সিভিক পুলিশের মৃত্যু। একের পর এক হিংসার জেরে এখন পাহাড় জুড়ে একটাই প্রশ্ন, আলোচনার কী হবে?
এই সংশয় আরও বেড়েছে দুটি কারণে। রাজ্য মনে করছে, শুক্রবারের বিস্ফোরণের পিছনে এমন কোনও হাত রয়েছে, যারা কট্টরপন্থী এবং আলোচনা বন্ধ করে দিতে চায়। উল্টো দিকে মোর্চার ধারণা, তাদের ফাঁদে ফেলতে এবং গোর্খাল্যান্ডের আবেগকে বদনাম করতেই বিস্ফোরণ।
আরও পড়ুন: আন্দোলনে আছি যুদ্ধে নয়, আতঙ্কে পাহাড়
অনেকের মতে, বিস্ফোরণকে ঘিরে নতুন করে তৈরি হওয়া এই মতভেদ কী ভাবে মেটানো হবে, তা-ই এখন বড় প্রশ্ন। নবান্নের বক্তব্য, বিস্ফোরণের পরে গুরুঙ্গ যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট, গোর্খাল্যান্ডের আবেগকে তিনি নতুন করে সামনে তুলে আনতে চাইছেন। অনড় রাজ্য আপত্তি জানালেই তিনি কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করতে বলবেন। মোর্চার সুর চড়ানোর পিছনে অন্য কারও ইন্ধন রয়েছে বলেও সন্দেহ একাংশের।
চাপের মুখে মোর্চার নেতারা এ দিন আলোচনার কথা বলেছেন। তবে সেটা যে শুধু গোর্খাল্যান্ড নিয়ে, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন। যেমন, মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বিনয় তামাঙ্গ বলেছেন, ‘‘আমাদের দাবি নিয়ে কথা হবে বলে ডাকলেই আলোচনা শুরু হতে পারে।’’ কিন্তু, রাজ্য তো গোর্খাল্যান্ডের দাবি মানবে না বলে গোড়া থেকেই অনড়। তা হলে জট কাটবে কী ভাবে? মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা একান্তে জানান, গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে অতীতেও রাজ্য আলোচনা করেছে। তার পরেই জিটিএ চুক্তি হয়েছিল। তাই পাহাড়ের মানুষের আবেগকে মর্যাদা দিয়ে আলোচনা শুরু করতেই পারে রাজ্য সরকার।
কেন্দ্রও চাইছে, দ্রুত আলোচনা শুরু হোক। দিল্লি থেকে একাধিকবার নবান্নের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ দিন বিস্ফোরণ নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দিয়ে পৃথক তদন্ত করার কথা ভাবছে তারা। একই সঙ্গে জট খুলতেও উদ্যোগী হয়েছে তারা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আলোচনা হবে রাজ্য ও মোর্চার মধ্যে। কেন্দ্র নাক গলাবে না।
রাজ্যের যুক্তি, গুরুঙ্গ হিংসার পথে সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছেন। শুক্রবার রাতেও পাহাড়ের বাদামতাম এলাকায় বন দফতরের রেঞ্জ অফিস ও কোয়ার্টার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোরে লেবংয়ে মোর্চার একটি অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাহাড়বাসীরা এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি এমনই যে, গুরুঙ্গকে বিবৃতি দিতে হয়েছে। মোর্চার একাংশ বলছে, ‘এই অবস্থায় তো আমরাই উল্টে চাপে পড়ে গেলাম!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy