সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতারির পর থেকে মন্ত্রী মদন মিত্র বেশির ভাগ সময়টাই হাসপাতালে কাটাচ্ছেন কী ভাবে, বিভিন্ন শিবিরে প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এ বার খাস বিধানসভায় বিরোধী পক্ষের একই প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যের কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি।
বুধবার ছিল কারা দফতরের বাজেট সংক্রান্ত বিতর্ক এবং সেই বাজেট পাশের পালা। সেখানেই বিরোধী শিবিরের বিধায়কেরা কারামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতা হওয়ার কারণেই কি দিনের পর দিন জেলে না-থেকে হাসপাতালে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন মদনবাবু? প্রশ্নের মুখে স্পষ্টতই বিব্রত হয়ে পড়েন হায়দর আজিজ সফি। তার পরেই তিনি এর পুরো দায় চাপিয়ে দেন স্বাস্থ্য দফতরের উপরে। যার দায়িত্বে আছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কারামন্ত্রীর এ-হেন উত্তরের জেরে বিধানসভায় দিনভর গুঞ্জন চলল বিরোধী শিবিরে। তা হলে কি রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে মন্ত্রী মদন মিত্রের মাসের পর মাস থেকে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য পরোক্ষে মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করলেন সফি? বিধানসভায় দাঁড়িয়ে অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথা বলেননি সফি, বলেছেন স্বাস্থ্য দফতরের কথা। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কী করার আছে! হাসপাতাল ছাড়লেই আমরা মন্ত্রীকে জেলে রাখতে পারি।’’
একই ভাবে এ দিন বিধানসভায় প্রশ্ন ওঠে জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও। এবং তখনই ওঠে সারদা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষের আত্মহত্যার চেষ্টার প্রসঙ্গটিও। এই বিষয়ে কারামন্ত্রী জানিয়ে দেন, নাটক করেছিলেন কুণাল।
কংগ্রেস বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন এ দিন বিধানসভায় সরাসরি মদনবাবুর নাম না-করে প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকার বলছে, জেলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ভাল। অথচ রাজ্যের এক মন্ত্রীকে কেন দিনের পর দিন জেলের বাইরে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে? তা হলে কি তৃণমূলের নেতাদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা?
‘‘সে-ক্ষেত্রে জেলের আইন সংশোধন করে তৃণমূলের নেতাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে না কেন,’’ জানতে চান সাবিনা। এর জবাবে কারামন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা তো মন্ত্রী অসুস্থ থাকায় তাঁকে ওই হাসপাতালে ‘রেফার’ করেছিলাম। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল যদি ওই
মন্ত্রীকে ছাড়তে না-চায়, তা হলে আমরা কী করব?’’
সিপিএমের বিধায়ক বাসুদেব খান প্রশ্ন তোলেন, জেলে বন্দিদের নিরাপত্তা কোথায়! আদৌ আছে কি? থাকলে কুণালের মতো বন্দিরা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কী করে?
জবাব দিতে উঠে কারামন্ত্রী দাবি করেন, কুণালের পুরোটাই নাটক ছিল। উনি আত্মহত্যার চেষ্টা করার পরে জেলের (প্রেসিডেন্সি) সুপারকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট কারাকর্মীর বিরুদ্ধেও। ‘‘কিন্তু পরে সবিস্তার তদন্তে দেখা গেল, কুণাল নাটক করেছেন। তাই সুপারের সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়েছে,’’ বলেন মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy