উপস্থিত: হাড়োয়ায় মমতা। পাশেই মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। ছবি: নির্মল বসু।
বাবা দল ছাড়ার পর তৃণমূলের কর্মসূচিতে এত দিন যাননি বীজপুরের বিধায়ক তথা মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়। শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়াতে সরকারি পরিষেবা বিতরণের অনুষ্ঠানে অবশ্য হাজির হয়েছিলেন তিনি। যেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুভ্রাংশুর দলের কর্মসূচিতে না থেকে সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জোর চর্চা চলছে।
দলীয় সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনের তরফে উত্তর ২৪ পরগনার বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই তালিকায় শুভ্রাংশুর নাম ছিল না। যদিও এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শুরুর আগেই হাড়োয়া পৌঁছে যান মুকুল-পুত্র। তাঁকে সভাস্থলে দেখে অনেকেই চমকে ওঠেন। ততক্ষণ বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংসদদের অনেকেই মঞ্চে উঠে বসেছেন।
আরও পড়ুন: ‘আমি সংখ্যালঘুদের পক্ষে, ওদের বাদ দিয়ে কাজ করতে পারব না’
তৃণমূলের জেলা নেতারা এমন সময় ঠিক কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। যদি মুখ্যমন্ত্রী এসে তাঁকে দেখে বিরক্ত হন, এ কথা ভেবে মঞ্চ থেকে সবাইকে নীচে নেমে আসতে বলা হয়। শুভ্রাংশুর মতো বাকি বিধায়ক-মন্ত্রীরাও মঞ্চের নীচে অপেক্ষা করতে থাকেন।
মুখ্যমন্ত্রী যখন সভাস্থলে পৌঁছন তখন তাঁকে স্বাগত জানাতে শুভ্রাংশ একেবারে পিছনের সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। যা মুখ্যমন্ত্রীর চোখ এড়ায়নি। এর পর মুখ্যমন্ত্রী পিছনে পিছনে অন্যদের মতো তিনিও মঞ্চে উঠে বসেন। তার আগে অবশ্য বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের দুই বিধায়ক ব্যক্তিগতভাবে মুকুল-পুত্রকে অনুষ্ঠান থেকে চলে যেতে বলেন। তার পরেও তিনি অবশ্য ফিরে যাননি। শুভ্রাংশু এ দিন বলেন, ‘‘অন্যের কথায় ফিরে যাব কেন? শরীর খারাপ থাকায় আগের কর্মসূচিতে যেতে পারিনি। আজ গিয়েছিলাম। শরীর ঠিক থাকলে পরেও দলীয় কর্মসূচিতে যাব।’’
এ দিন অবশ্য সভা শুরু হতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই শুভ্রাংশু রায়ের উপস্থিত থাকার কথা জানান। শুভ্রাংশও মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। তাঁর খোঁজখবরও নেন মুখ্যমন্ত্রী। তা দেখে অবশ্য হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন তৃণমূলের জেলা নেতারা।
এখনও নিরাপত্তা কেন!
মুকুল রায়ের জন্য কেন ‘ওয়াই প্লাস’ নিরাপত্তা দেওয়া হবে? এতে কি কেন্দ্রীয় বাহিনীর অপচয় হচ্ছে না? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করে আবেদনকারী দেবরাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুকুলবাবু কেন্দ্রের শাসক দলে যোগ দেওয়ার পরই তাঁকে ‘ওয়াই প্লাস’ সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তাঁর জন্য ১২ জন সিআরপি জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, যাঁর বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআইয়ের মতো দু’টি কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে, তাঁকে অন্য একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা কেন নিরাপত্তা দেবে? হাইকোর্টে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে কেন্দ্রের কৌঁসুলি জানিয়েছেন, মুকুলবাবুর উপরে হামলা হতে পারে— কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। মুখবন্ধ খামে সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে চান তিনি। আদালত সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি চেয়েছে।
গৃহীত মামলা
সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুকুল রায়ের দায়ের করা ফৌজদারি মানহানির মামলা আজ গৃহীত হল দিল্লির পাতিয়ালা হাউস আদালতে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় মুকুল রায়ের বক্তব্য শুনে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে মুকুল শিবির। বিশ্ব বাংলা বিতর্কে মুকুল রায়ের তোলা অভিযোগের জবাবে তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছিলেন অভিষেক। তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন মুকুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy