সভার-প্রস্তুতি: রবিবার বহরমপুর স্টেডিয়ামে। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ তিনেক আগে তিনি এক বার এসেছিলেন। তবে সে বড় বিপদের সময় ছিল। দৌলতাবাদের বালিরঘাটে দুর্ঘটনার খবর শুনে তড়িঘড়ি নবান্ন থেকে ছুটে এসেছিলেন তিনি। তবে এ বারে আসার কারণ অবশ্য প্রশাসনিক সভা ও প্রশাসনিক বৈঠক। আর তিনি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার খবর শোনার পর থেকেই রীতিমতো তটস্থ মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি নদিয়ার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক বৈঠকে বালিরঘাটে দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ট্রাফিক ব্যবস্থা ও একের পর এক খুনের ঘটনা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে তুলোধোনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারে সেই বালিরঘাট যে জেলায়, সেই মুর্শিদাবাদে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে প্রশাসনিক বৈঠকে কার কপালে ধমক আর কার কপালে প্রশংসা আছে তা নিয়ে জেলা জুড়ে জল্পনার অন্ত নেই।
রবিবার ছুটির দিন হলেও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। যেন বড় পরীক্ষার আগের দিন। প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে সেই রিপোর্টে বার বার চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন দফতরের কর্তারা। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক বলে কথা! কখন যে কী হবে তা কেউ বলতে পারে না। তাই কোনও রকম ঝুঁকি নিচ্ছি না।’’
এ অবস্থা কি শুধুই প্রশাসনের কর্তাদের? একেবারেই না। শাসকদলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও রীতিমতো চাপে আছেন। এলাকার প্রকল্পের জন্য হিসেবের বাইরে খুব বেশি কিছু চাইলে যে ধমক খেতে পারে তা বিলক্ষণ জানেন জনপ্রতিনিধিরা। তাই কী চাইবেন, কতটুকু চাইবেন সে বিষয়েও রীতিমতো নোট তৈরি করে রাখছেন তাঁরা।
এক নির্বাচিত প্রতিনিধির কথায়, “প্রশাসনিক সভাগুলি তো দেখতেই পাচ্ছেন। কখন যে দিদি রেগে যাবেন আর কখন মেজাজ ভাল থাকবে তা স্বয়ং ঈশ্বরও জানেন না। ফলে কথা বলতে হবে মেপে।’’
আজ, সোমবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে একটি প্রশাসনিক সভা ও প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। বহরমপুর স্টেডিয়ামে প্রায় এক লক্ষ মানুষের জমায়েত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী স্টিলের কাঠামো দিয়ে পান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বহরমপুর স্টেডিয়ামে। তবে এমন প্যান্ডেল বহরমপুরে নতুন হলেও কলকাতা, কৃষ্ণনগর বা ঝাড়গ্রাম এমন জিনিস ইতিমধ্যে দেখে ফেলেছে। তবুও পথচলতি লোকজনের উৎসাহের অন্ত নেই। প্যান্ডেল দেখতে রবিবার দিনভর স্টেডিয়ামে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে হেলিকপ্টারে বহরমপুর আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। দুপুর দেড়টা নাগাদ বহরমপুর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক সভায় পৌঁছবেন তিনি। সেখানে ৮০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা। উদ্বোধনের তালিকায় আছে গোকর্ণে ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে তৈরি ৪০০ কেভি বিদ্যুতের সাব স্টেশন, কয়েকশো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, বহরমপুর থানার নতুন ভবন, বেশ কিছু বিএলআরও অফিস-সহ মোট ১২০ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে। প্রশাসনিক সভা শেষে রবীন্দ্র সদনে বেলা তিনটে নাগাদ হবে প্রশাসনিক বৈঠক। স্টেডিয়ামে একটি স্থায়ী হেলিপ্যাড রয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সার্কিট হাউসের সামনে ব্যারাক স্কোয়ারে আরও একটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy