সরকারি ফাঁকা জমি নিলাম করে সর্বোচ্চ দর যত ওঠে, এত দিন তার উপরে বার্ষিক মূল্যমান (অ্যানুয়াল ভ্যালুয়েশন) নির্ধারণ করা হতো। সেই বার্ষিক মূল্যমানের উপরে সম্পত্তিকর ধার্য করে আদায় করত কলকাতা পুর প্রশাসন। এ বার সেই নিয়মে কিছু বদল আনতে চলেছে পুরসভা। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানান, নিয়ম বদল নিয়ে পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাব আনা হবে।
এত দিন কী পদ্ধতি ছিল? কর মূল্যায়ন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরসভা বা সরকারি সংস্থার ফাঁকা জমি বিক্রির ক্ষেত্রে নিলাম করা হয়। যে বা যারা সর্বোচ্চ দর দেয়, তারাই জমির স্বত্ব পেয়ে থাকে। ওই ফাঁকা জমির দরের উপরে ৭ শতাংশ হারে বার্ষিক মূল্যমান নির্দিষ্ট করা হয়। সেই বার্ষিক মূল্যমানের উপরে ৪০.৫ শতাংশ হারে সম্পত্তিকর আদায় করে পুরসভা।
নতুন নিয়ম ঠিক কেমন হতে চলেছে? মেয়র শোভনবাবু জানান, নিলামে যে দরই উঠুক না কেন, রাজ্য সরকারের রেজিস্ট্রি দফতরের হিসেব অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জমির এলাকাভিত্তিক যা বাজার দর, তা মেনে বার্ষিক মূল্যমান ঠিক হবে। বস্তুত, নিলামের দর রেজিস্ট্রি দফতরের বাজার দরের থেকে বেশি হয়ে থাকে বলে একাধিক আধিকারিক মনে করেন। সে ক্ষেত্রে নতুন নিয়মে বার্ষিক মূল্যমানের পরিমাণ কমবে, ফলে কমবে পুরসভার সম্পত্তিকরের পরিমাণও। যদিও মেয়রের দাবি, নিলামে সর্বোচ্চ দরে জমির মূল্য এমনিতেই বেশি। তার উপরে বার্ষিক মূল্যমান দেওয়ায় চাপ বাড়ে। সে কারণেই রেজিস্ট্রি দফতরের নির্ধারিত বাজার দর অনুযায়ী তা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আবাসন নিয়ন্ত্রণে। কেন্দ্রের নয়া আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন চালু করতে প্রস্তুত রাজ্য। বৃহস্পতিবার নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই আয়োজিত ক্রেডাই বেঙ্গল রিয়্যালটি এক্সপো উদ্বোধনে এসে তা জানান আবাসনমন্ত্রী ও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই আইন চালুর জন্য খসড়া বিধি তৈরি হয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্র ‘রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি’ আইন তৈরি করে সব রাজ্যকে আগেই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় আইন মেনে চলতে প্রতি রাজ্যেই অথরিটি তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই ওই আইনের আওতায় খসড়া বিধি করেছে রাজ্য। শোভনবাবু জানান, ক্রেডাই-এর কাছে খসড়া বিধি সম্পর্কে মতামতও জানতে চেয়েছে রাজ্য। ক্রেডাই-এর দাবি, এই সংক্রান্ত খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা চলছে। রাজ্যের কাছে তাদের আর্জি, নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলিকে এই আইনের বাইরে রাখা হোক। ক্রেডাই বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট নন্দু বেলানি জানান, যে সব নির্মীয়মাণ আবাসন ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে, সেখানে নতুন আইন চালু করলে অসুবিধায় পড়বেন নির্মাতা সংস্থা ও ক্রেতা। কারণ, নতুন আইনে প্রকল্প হবে কার্পেট এরিয়ার ভিত্তিতে। এখন যা হয় সুপার বিল্ট আপ এরিয়ার হিসেবে। নতুন আইনে প্রকল্পের জন্য রাখতে হয় আলাদা এসক্রো অ্যাকাউন্টও। তাই পুরনো প্রকল্পকে নতুন আইনের আওতায় আনলে জট বাড়বে।
এ দিন শোভনবাবু নির্মাণ শিল্পে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তাঁর দাবি, রাজ্য লগ্নি টানতে নির্মাণ শিল্প সংক্রান্ত আইন সরল করেছে। করের বোঝা লাঘব ও সম্পত্তির যুক্তিযুক্ত মূল্যায়নও তাঁরা চালু করেছেন। তিনি জানান, বিপজ্জনক বাড়ি নিয়েও আইন আনছে সরকার। ভাড়াটে পুনর্বাসন-সহ জীর্ণ বাড়ি নতুন করে নির্মাণে বাড়তি জায়গা তৈরির অনুমোদন দেবে সরকার। তবে একই সঙ্গে মেয়র জানান, পুরসভার বকেয়া টাকা শোধ না-করলে কোনও প্রকল্প এগোবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy