প্রতীকী ছবি।
উত্তরবঙ্গের লাগোয়া অসম আগেই দখল করেছে বিজেপি। এ বার উত্তর-পূর্বের বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য ত্রিপুরাও দখলে এল তাদের। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই দৃষ্টান্তকে তুলে ধরে কোচবিহারে প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে জেলা বিজেপি।
বিজেপির কোচবিহার জেলা নেতৃত্বের কথায়, দু’টি রাজ্যে জয়কে দু’ভাবে ব্যবহার করতে চাইছেন তাঁরা। এক দিকে দেখাতে চাইছেন, অসমে বিজেপিকে ক্ষমতায় এনে সেখানকার লোকজন কত ভাল আছে। পাশাপাশি ত্রিপুরার জয়কে তুলে ধরে বোঝাতে চাইছেন, অন্য রাজ্যেও বাঙালিরা বিজেপিকে চাইছেন। তা হলে পশ্চিমবঙ্গে নয় কেন?
বিজেপির জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে-র কথায়, “দুই রাজ্যের উদাহরণ তো আছেই। এর সঙ্গে গোটা দেশের কথা আমরা তুলে ধরছি বাসিন্দাদের কাছে।’’ কেমন সাড়া পাচ্ছেন? তাঁর জবাব, ‘‘বাসিন্দারাও উৎসাহিত। অসম এবং ত্রিপুরা জয়ের পরে এ বারে কোচবিহার তথা গোটা বাংলায় জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
কোচবিহারের অসম লাগোয়া এলাকায় এর মধ্যেই এই প্রচার শুরু করে দিয়েছে তারা। কোচবিহার লাগোয়া বক্সিরহাট, তুফানগঞ্জের মতো এলাকায় দ্রুত দলের প্রভাব বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তুফানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র নমনি অসমের লাগোয়া। এই এলাকার মানুষের সঙ্গে তাই নমনি অসমের বাসিন্দাদের যোগযোগও রয়েছে। আত্মীয়তা ও ব্যবসার সূত্রে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন কোচবিহারে আসেন। সেই সঙ্গে চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারেও নমনি অসমের বাসিন্দারা কোচবিহারে আসেন। সেই যোগাযোগকে কাজে লাগিয়েই সূক্ষ্ম ভাবে প্রচার করছে বিজেপি।
আর তাই অসমের বিজেপি কর্মী-নেতাদেরও প্রচারে নামানো হচ্ছে। তাঁরা বিশেষ করে দাবি করছেন, অসমে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে। একই সঙ্গে সীমানাবর্তী এলাকায় কোনও কর্মীর উপর হামলা হলে বা ভয় দেখানোর চেষ্টা হলে অসমের কর্মীরা পাশে দাঁড়াবেন বলেও বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
মুখে অবশ্য কেউই সে কথা স্বীকার করছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতার কথায়, “সীমানা এলাকায় সব মানুষ একসঙ্গে বসবাস করেন। সেখানে শাসক দল হামলা করলে সবাই মিলে রুখে দাড়াতেই পারেন।”
কোচবিহারে বরাবরই বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। কোচবিহার লোকসভা আসনে উপনির্বাচনে বামেদের পিছনে ঠেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। জেলা নেতাদের আশা, পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা আরও ভাল ফল করবেন।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বিজেপিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “বিজেপি যেখানে ক্ষমতায় বসেছে সেখানে কি অরাজকতা নেমে এসেছে, তা সবাই জানে। আর কেন্দ্রের সরকার তো সাধারণ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তাই অসম সীমানা কেন, কোথাওই ওরা সুবিধে করতে পারবে না।” দলের জেলার সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “বিজেপির উপর হামলা বা ভয় দেখানোর মতো ঘটনা কোচবিহারে ঘটেনি। এমনিতেই এখানে বিজেপির অবস্থা খারাপ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy