Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
কৃষক সভার নবান্ন অভিযান

পুলিশ কি মহিলাদের নির্যাতন করেছিল, রিপোর্ট তলব মানবাধিকার কমিশনের

নবান্ন অভিযানে পুলিশের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ আগেই জানিয়েছিলেন বাম নেতারা। এ বার সে দিনের সংঘর্ষে মহিলা বিক্ষোভকারীদের উপরে নিগ্রহ নিয়ে সরব হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

অভিযানকারীদের বাধা দিতে প্রস্তুত পুলিশ।

অভিযানকারীদের বাধা দিতে প্রস্তুত পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৬:৪৪
Share: Save:

নবান্ন অভিযানে পুলিশের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ আগেই জানিয়েছিলেন বাম নেতারা। এ বার সে দিনের সংঘর্ষে মহিলা বিক্ষোভকারীদের উপরে নিগ্রহ নিয়ে সরব হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বুধবার সিপিএম এবং সিপিআইয়ের মহিলা সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন ওই সংগঠনের নেতারা। তার ভিত্তিতে মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডি়জি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় মহিলা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাম মহিলা সংগঠনগুলি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ অগস্ট বামেদের নবান্ন অভিযানে মহিলা বিক্ষোভকারীদের উপরে পুরুষ পুলিশকর্মীরা নিগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ। সেখানে কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিল না বলেও অভিযোগ উঠেছে। এর জবাবে বক্তব্য জানাতেই রাজ্য প্রশাসনের ওই তিন শীর্ষকর্তাকে দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।

কমিশন জানিয়েছে, মহিলা বিক্ষোভকারীদের সামলানোর ক্ষেত্রে মহিলা পুলিশ থাকা বাধ্যতামূলক। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও রয়েছে। পাশাপাশি, অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ আক্রমণ করেছে। কমিশনের বক্তব্য, এই অভিযোগ সত্যি হলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার ভঙ্গ করা হয়েছে।

২৭ তারিখের ওই ঘটনার পর বাম নেতৃত্ব অভিযোগ করেছিল বিনা প্ররোচনায় সে দিন বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল পুলিশ। নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে ওই দিন কলকাতা-হাওড়ায় একযোগে পাঁচ-ছ’টি জায়গায় পুলিশ বনাম বিক্ষোভকারীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। হাওড়ায় ব্যবহার করা হয়েছিল জলকামানও। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হন বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী। তাঁদের মধ্যে এক জনকে চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়।

কলকাতা ও হাওড়ার পুলিশকর্তাদের দাবি, মিছিলকে কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় আটকানো হবে, তা আগেই জানানো হয়েছিল। সেই মতো মিছিলের পথ আটকাতেই বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুড়তে শুরু করেন। বাঁশ-লাঠি নিয়েও আক্রমণ চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই পাল্টা লাঠি চালানো হয়। লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সে দিন মহিলা পুলিশ রাখা হয়েছিল। তার প্রমাণও রয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চিঠির উত্তরে সে সবই আমরা জানাব।’’

যদিও গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জগমতী সাঙ্গোয়ান বলেন, ওই দিন মহিলাদের উপরে যে সব জায়গায় হামলা করা হয়েছে, সেখানে কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না। মহিলাদের গোপনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে। লজ্জায় তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাননি। ‘‘মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে মহিলারা আক্রান্ত হলেও তিনি নীরব। ওই রাজ্যে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করে আমরা পশ্চিমবঙ্গকে সতর্ক করতে চেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE