Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া নয়, হুঁশিয়ারি বামফ্রন্টে

রাজ্য স্তরে পয়লা নম্বর শক্তির নাম তৃণমূল। সব জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত তাদেরই দখলে।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০৪:২৬
Share: Save:

জাতীয় স্তরে এই মুহূর্তে সব চেয়ে শক্তিমান দলের নাম বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের জয়রথ থামাতে তাই বিরোধী শিবিরে উঠে আসছে জোট বাঁধার ডাক। বরাবরের শত্রুতা সরিয়ে রেখে উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনে একজোট হয়ে দেখিয়েছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী এবং মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি!

রাজ্য স্তরে পয়লা নম্বর শক্তির নাম তৃণমূল। সব জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত তাদেরই দখলে। উপরন্তু শাসক দল ডাক দিয়েছে এ বার বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়ার! জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধীদের মতো এ রাজ্যে তাই তৎপর হচ্ছে তৃণমূল-বিরোধীরা। অভিন্ন প্রতিপক্ষ যে হেতু তৃণমূল, তাই তাদের রুখতে পঞ্চায়েত ভোটে একজোট হওয়ার আহ্বান নিয়ে তৃণমূল স্তরে বাকি বিরোধীদের কাছে যাচ্ছে বিজেপি। এবং তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছে বামফ্রন্ট!

বাকি বিরোধীদের তুলনায় বিজেপির সুবিধা, তারা কেন্দ্রের শাসক দল। নিজেদের সুবিধা কাজে লাগিয়েই স্থানীয় স্তরের বিজেপি নেতারা পঞ্চায়েত ভোটে বাকি বিরোধীদের এক ছাতার তলায় আসার প্রস্তাব দিচ্ছেন বলে আলিমুদ্দিনে রিপোর্ট দিয়েছেন বামফ্রন্টের একাধিক শরিক দলের নেতৃত্ব। সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত ২৫তম রাজ্য সম্মেলনেও পঞ্চায়েতের লড়াই নিয়ে প্রস্তাবের উপরে আলোচনায় কিছু প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তাঁদের অজান্তেই তলায় তলায় জোট হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি আছে। এই ইঙ্গিত পাওয়ার পরেই রাজ্য সম্মেলনে যেমন সিপিএম নেতৃত্ব ডাক দিয়েছেন বিজেপি এবং তৃণমূলের সঙ্গে একই রকম তীব্রতায় লড়তে হবে, তেমনই পঞ্চায়েতের জন্য বামফ্রন্ট নির্দেশিকা জারি করে বিজেপি সম্পর্কে সতর্ক-বার্তা জারি করেছে। জেলায় জেলায় সাধারণ সভা করেও এখন দলের নেতা-কর্মীদের একই হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, গৌতম দেব, সুজন চক্রবর্তীরা।

আরও পড়ুন: ‘হেরোদের মতো কথা’ বলছেন রাহুল: পাল্টা কটাক্ষ সীতারামনের

রাজ্য সম্মেলনের প্রস্তাবের মতো বাম নির্দেশিকাতেও বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি ও আরও নানা ভাবে বিজেপি শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। বিষয়টি খুবই সতর্কতার দাবি রাখে। কোনও ক্রমেই তৃণমূলকে পরাজিত করার জন্য বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করা যাবে না’। নদিয়া জেলার সাধারণ সভার পরে রবিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা বারবার বলছি, তৃণমূলকে দিয়ে বিজেপি-কে বা বিজেপি-কে দিয়ে তৃণমূলকে হারানোর ভাবনা আত্মঘাতী! কোনও প্রলোভনেই বিজেপির দিকে যাওয়া যাবে না। বাংলায় পঞ্চায়েতের জন্য বামফ্রন্ট যে কাজ করেছিল, তা মাথায় রেখে নির্বাচনে নিজেদের লড়াই লড়তে হবে।’’

বিস্তর রক্তক্ষরণের পরেও বামেদের এখনও প্রায় ২০% ভোট আছে, যা বাঁচাতে মরিয়া সূর্যবাবুরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘আমরা কারও সঙ্গে জোট করব না। পঞ্চায়েতে একা লড়ব, আমাদের ভোটও বাড়বে।’’ পুরুলিয়ায় দলীয় কর্মসূচিতেও দিলীপবাবু প্রকাশ্যে এই সুর রেখেছেন। তবে পঞ্চায়েতের ধর্ম মেনে তলায় তলায় কার পাশে কে দাঁড়ায়, তা নিয়ে জল্পনা থাকছেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Left front CPM BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE