দিল্লিতে বাবুলের সুপ্রিয়র সঙ্গে দেখা করলেন নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
বৈঠকের জন্য শ্রমিক নেতা ও আধিকারিকদের ডাকা হয়েছিল দিল্লিতে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই বৈঠক বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফের হতাশা হিন্দুস্তান কেব্লসের কর্মীদের মধ্যে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি। বৈঠক বাতিল হলেও আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসেছিলেন শ্রমিক নেতারা। তাঁর সঙ্গে কথা বলে খানিক আশার আলো দেখেছেন বলে দাবি তাঁদের।
রূপনারায়ণপুরের ওই কারখানা ফের চালু হবে কি না, সে নিয়ে টালবাহানা চলছে অনেক দিন ধরেই। বৃহস্পতিবার বিআইএফআর-এর একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল দিল্লিতে। সংস্থার কর্মী-আধিকারিকদের মতে, এই অবস্থায় এই বৈঠকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে কারণে আধিকারিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা মঙ্গলবারই দিল্লি রওনা হন। কিন্তু বৈঠক বাতিল করে দেওয়ায় শ্রমিক নেতারা রীতিমতো ক্ষিপ্ত। এর পরে বৈঠকটি কবে হবে, তা-ও বিআইএফআরের তরফে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের।
শ্রমিক নেতারা জানান, বৈঠক বাতিল হওয়ায় কারখানার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন যেমন ঝুলে রইল, তেমনই শ্রমিক-কর্মীদের ১৭ মাসের বকেয়া বেতন কী ভাবে মেটানো হবে, তারও কোনও ফয়সালা হল না। এর মধ্যে আবার ভারী শিল্প মন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে, এই উৎপাদন শূন্য কারখানার কর্মীদের বেতন পরিকল্পনা বহির্ভূত তহবিল থেকে আর মেটানো হবে না। এই পরিস্থিতে শ্রমিক নেতারা বিআইএফআর-এর বৈঠকটির জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দরবার করলেও তা হয়নি। কারখানার আইএনটিইউসি-র সম্পাদক উমেশ ঝা বলেন, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি তাতে বকেয়া বেতন চেয়ে কোথায় দরবার করব, বুঝতে পারছি না।’’ সিটুর সম্পাদক মধু ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সরকারের উচিত স্থির সিদ্ধান্তে আসা। আমরা কারখানায় যাচ্ছি, অথচ ১৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। কারও কোনও হেলদোল নেই!’’ এইচএমএস-এর সম্পাদক বিরোজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আশায় ছিলাম বিআইএফআর-এর বৈঠকে অন্তত বকেয়া বেতন মেটানোর উপায় বেরোবে। সেই আশাতেও জল পড়ল।’’
তবে এত হতাশার মধ্যেও সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুলের সঙ্গে বৈঠক করে খুশি শ্রমিক নেতারা। তাঁরা দিল্লিতে রয়েছেন জানতে পেরে বুধবারই বাবুল তাঁদের ডেকে নেন। বিকেল ৫টা নাগাদ শ্রমিক নেতারা তাঁর বাসভবনে যান। প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁদের সঙ্গে কেব্লসের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন বাবুল। বিআইএফর-এর বৈঠক বাতিল হওয়ার কথা জানিয়ে নেতারা বাবুলের কাছে বকেয়া বেতনের ব্যাপারে কিছু ব্যবস্থা করার আর্জিও জানান। তাঁরা জানান, সামনেই দুর্গাপুজো। শ্রমিক-কর্মীদের হাতে টাকা নেই। ফলে, উৎসবের সময়েও তাঁরা থাকবেন আঁধারে। তাঁদের উপস্থিতিতেই বাবুল ফোন করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের সঙ্গে কেব্লস নিয়ে কথা বলেন বলে জানান শ্রমিক নেতারা। বকেয়া বেতনের বিষয়টি তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলেও জানান। পরে কারখানার সমস্যা নিয়ে রাজ্যসভার দুই সাংসদ সিপিএমের তপন সেন এবং সিপিআইয়ের ডি রাজার সঙ্গেও আলোচনা করেন কেব্লসের শ্রমিক নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy