মিলল গুলি। জানা গেল গুলির পরিচয়— থ্রি নট থ্রি।
কিন্তু গত মঙ্গলবার ভাঙড়-কাণ্ডে নিহত মফিজুল আলি খান এবং আলমগির মোল্লাকে কারা গুলি করল, সেই রহস্যভেদ হল না দু’দিন পরেও।
ঘটনার পরেই বিরোধীরা অভিযোগ তোলে পুলিশের গুলিতে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের একাংশের অভিযোগ ছিল তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের আশ্রিত ‘বহিরাগত দুষ্কৃতীরা’ পুলিশের উর্দি পরে ওই গুলি চালিয়েছে। পুলিশেরও দাবি ছিল,‘বহিরাগত’রাই গুলি চালিয়েছে। তবে, তারা পুলিশের উর্দি পরে চালিয়েছে, এমন নয়। বরং পুলিশের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থাকা দুষ্কৃতীরাই গুলি চালিয়ে পরিস্থিতিকে ঘোরালো করে। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মাও দাবি করেন, ‘‘পুলিশ কোনও ভাবেই গুলি চালায়নি।’’
বুধবার মফিজুল এবং আলমগিরের দেহের ময়না-তদন্ত হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। মফিজুলের পেটের নীচে গুলি লেগেছিল। আলমগিরের গলায়। ময়না-তদন্তকারীরা জানান, দু’টি দেহ থেকে দু’টি থ্রি নট থ্রি কার্তুজ বেরিয়েছে। যা দু’-আড়াই ফুট দূর থেকে ছোড়া হয়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশের এক কর্তা মানছেন, ওই গুলি পুলিশ ব্যবহার করে। আবার একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ওয়ান শটার বা একনলা-দোনলা বন্দুকেও ওই গুলি ব্যবহার হয়। যা দুষ্কৃতীরা ব্যবহার করে। অর্থাৎ, কার গুলিতে দুই যুবকের প্রাণ গেল তা স্পষ্ট হল না এ দিন। কেননা, এখনও পুলিশ কোনও ‘বহিরাগত’কে ধরতে পারেনি। তবে, তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই দিন ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কার্তুজের হিসেব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া কার্তুজ ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
পাওয়ার গ্রিডের সাব-স্টেশন তৈরিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুর থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাঙড়। সন্ধ্যায় শ্যামনগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন মফিজুল এবং আলমগির। আলমগিরে গায়ে বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতও রয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়না-তদন্তকারীরা। নিহতদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
নিজেদের স্বপক্ষে পুলিশের দাবি, ওই দিন তাণ্ডবকারীদের তাড়ায় সন্ধ্যার আগেই তারা এলাকাছাড়া হয়ে গিয়েছিল। তার আগে, মঙ্গলবার দু’দফায় পুলিশ ফাঁড়ি এবং পাওয়ার গ্রিডের অফিসে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের উর্দি ও রাইফেল লুঠের পাশাপাশি গ্রিডের নিরাপত্তারক্ষীদের রাইফেলও লুঠ হয়। সেই রাইফেল থেকে ওই গুলি ‘বহিরাগত’রা চালিয়ে থাকতে পারে। ফাঁড়ি থেকে লুঠ করা সেই উর্দিই রাস্তায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy