Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঘরের মাঠে মুকুল-বধে সুনীল-সারথি অর্জুন

তৃণমূলের সুনীল প্রচারে ছয়লাপ করে দিয়েছেন গোটা কেন্দ্র। বিজেপি-র সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হওয়ার সুবাদে সন্দীপের প্রচারেও গাড়ি-বাইকের ছড়াছড়ি। এমনকী, কংগ্রেস প্রার্থী, কাউন্সিলর গৌতম (বাবু) বসুর প্রচারেও চোখে দেখার আড়ম্বর আছে। যা একেবারেই নেই সিপিএমের গার্গী চট্টোপাধ্যায়ের।

সন্দীপন চক্রবর্তী
নোয়াপাড়া উপনির্বাচন শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

সবংয়ে অভিযান সফল! এ বার লক্ষ্য কলকাতার উপকণ্ঠে নোয়াপাড়া!

বছরদেড়েক আগের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সাফ্যলের বাজারেও যে সব আসনে ঘাসফুল ফোটেনি, সবংয়ের মতোই সেই তালিকায় ছিল নোয়াপাড়া। সেখানে কংগ্রেস বিধায়ক মধুসূদন ঘোষের মৃত্যুর জেরে অকাল ভোটকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে নিতে মরিয়া হয়েছে শাসক দল। ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের নেতৃত্বে তৃণমূলের বাহিনী তৈরি ২৯ জানুয়ারি হিসাব বুঝে নেওয়ার জন্য!

নোয়াপাড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসু এ বার টিকিট পাননি শুধু নয়, দলের প্রচারেও তিনি ব্রাত্য। তবু তাঁর হাতে এমন কিছু লোক-লস্কর নেই, যারা অর্জুনদের বেগ দিতে পারে! আবার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে শাসক শিবিরে অর্জুন-বিরোধী নেতার সংখ্যা খুব কম নয়। তাঁরা খুব সক্রিয় ভাবে দলের হয়ে ভোট করতে নামবেন, এমন আশা করছেন না তৃণমূলের সবাই। কিন্তু তলে তলে বিক্ষুব্ধদের সমর্থন পদ্মফুলের চিহ্নে গিয়ে না পড়ে, সে দিকেই নজর রাখতে হচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। হাজার হোক, নোয়াপাড়া তো আবার মুকুল রায়ের ‘ঘরের মাঠ’ও বটে! মুকুলকে শিক্ষা দিতেই তৃণমূল নেতারা বিজেপি-কে দুরমুশ করতে চান।

তৃণমূল প্রার্থী গারুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান এবং অর্জুনের আত্মীয় সুনীল সিংহের দাবি, এলাকায় তাঁর নিজের কাজ এবং রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডই তাঁকে অনায়াসে উতরে দেবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ও রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতে, মুকুল বা বিজেপি কোনও ‘ফ্যাক্টর’ নয়। লড়াই সিপিএমের সঙ্গেই। আর ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্জুন আত্মবিশ্বাসী, ‘‘আমাদের জয় নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। বিজেপি এখানে চতুর্থ হলে আশ্চর্য হবেন না!’’

বিজেপি নেতারা স্বভাবতই এমন দাবি মানতে নারাজ। তবে তাঁদের আশঙ্কা অন্য। দলীয় প্রার্থী সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারে গিয়ে বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের ‘অভব্যতা’র মুখে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মানুষ বিজেপি-কে চান। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তো গণতন্ত্রই নেই! পুলিশ-প্রশাসন তৃণমূলের কাছে মেরুদণ্ড বিক্রি করে বসে আছে!’’ ভোটের দিন পাঁচ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী থাকলেও খুব ভরসায় নেই বিরোধীরা!

তৃণমূলের সুনীল প্রচারে ছয়লাপ করে দিয়েছেন গোটা কেন্দ্র। বিজেপি-র সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হওয়ার সুবাদে সন্দীপের প্রচারেও গাড়ি-বাইকের ছড়াছড়ি। এমনকী, কংগ্রেস প্রার্থী, কাউন্সিলর গৌতম (বাবু) বসুর প্রচারেও চোখে দেখার আড়ম্বর আছে। যা একেবারেই নেই সিপিএমের গার্গী চট্টোপাধ্যায়ের। অল্প কিছু সহকর্মীর কাঁধে লাল ঝান্ডা, সামনে তিনি পায়ে হেঁটে। বাজারে-দোকানে-বাড়িতে ‘পাড়ার মেয়ে’র ভঙ্গিতেই ঢুকে পড়ছেন তিনি। আলাপচারিতায় তাঁর কাছেও পথচলতি মানুষের প্রশ্ন, ভোটটা দিতে পারব তো?

এ প্রশ্নের উত্তর নেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE