ফাইল চিত্র।
পরিবর্তনের সরকার গড়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষাকে রাজনীতিমুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই মুক্তি এখনও অলীক। তবে ছাত্র সংসদকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষেই সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের মডেলে রাজ্যের অন্যান্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজনৈতিক ছাত্র সংসদ গঠনের নিয়ম চালু হতে চলেছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানান, কয়েক দিনের মধ্যে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এই বিষয়ে যে-খসড়া তৈরি হয়েছে, তাতে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সঙ্গে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের ছাত্রী সংসদের আদলও অনুসরণ করা হয়েছে। স্থির হয়েছে:
• নির্বাচনে দাঁড়াতে গেলে পড়ুয়ার ন্যূনতম ৬০% হাজিরা থাকতেই হবে।
• ফৌজদারি ধারায় অভিযোগ থাকলে ভোটে দাঁড়ানো যাবে না।
• ভোটে দলীয় পতাকা-ফেস্টুন নয়।
• দ্বিতীয় বার কেউ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না।
• ছাত্র সংসদে লেডি ব্রেবোর্নের ধাঁচে কোষাধ্যক্ষ হবেন কোনও শিক্ষক।
• কলেজের ছাত্র সংসদে সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে থাকবেন দু’জন সহ-সাধারণ সম্পাদক, অনধিক সাত জন সহ-সম্পাদক। বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-সম্পাদকের সংখ্যা অনধিক দশ।
• ছাত্র সংসদে কোনও পড়ুয়া সভাপতি হবেন না। কোনও শিক্ষক ওই পদ পাবেন। জেভিয়ার্সে স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সভাপতি হন অধ্যক্ষ স্বয়ং। উপ-সভাপতি হন কোনও শিক্ষক। কিন্তু সরকার এক জন শিক্ষককেই সভাপতি করতে চাইছে।
মার্চে এবিপি আনন্দে এক সাক্ষাৎকারে সেন্ট জেভিয়ার্সের ধাঁচে ছাত্র সংসদ গড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘আমিও ছাত্র-রাজনীতি করেছি। ছাত্র সংসদের তিন-চারটে কাজ। নবাগতদের স্বাগত জানানো, সোশ্যাল করা এবং সরস্বতী পুজো। তার জন্য ওরা টাকাও পায়। সেটা কে খরচ করবে, তা-ই নিয়ে গোলমাল বাধে। এমন কিছু বড় ব্যাপার নয়।’’ শিক্ষামন্ত্রী এ দিন জানান, মুখ্যমন্ত্রী সেন্ট জেভিয়ার্স, লেডি ব্রেবোর্নের মতো পড়ুয়া-প্রতিনিধিদের নিয়ে স্টুডেন্টস কাউন্সিল তৈরির কথা বলেছিলেন। সেই বিষয়ে আইনও পাশ হয়েছে। ‘‘এ বছর থেকেই সেই নিয়মবিধি অনুযায়ী স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন করা হবে। এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি অনুমোদন করা হয়েছে। দু’চার দিনের মধ্যেই তা প্রকাশিত হবে,’’ বলেন পার্থবাবু।
যে-রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদের ভোটই হয় না, সেখানে নতুন মডেল এনে কী লাভ, প্রশ্ন তুলেছেন এসএফআই নেত্রী মধুজা সেনরায়। টিএমসিপি-র জয়া দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের যাতে লাভ হয়, টিএমসিপি তারই পক্ষে। এই সিদ্ধান্তে আমাদের সংগঠনের কোনও সমস্যা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy