কলকাতারাজ্য সরকারের প্রথম এনএসএস পুরস্কার পেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার সেই পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের হাতে। —নিজস্ব চিত্র
পড়ুয়াদের সেবাকাজে যুক্ত করতে চান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নাম-কা-ওয়াস্তে নয়। তিনি চান, সব কলেজেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম (এনএসএস) বা জাতীয় সেবা প্রকল্প বাধ্যতামূলক হোক। এই প্রকল্প আবশ্যিক করার আবেদন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে জানান, উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিবও কলেজ-অধ্যক্ষদের এই বার্তা দেবেন।
জাতীয় সেবা প্রকল্পের প্রতি পড়ুয়াদের আকর্ষণ বাড়াতে মিঠেকড়া পথ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। মিঠে মানে এই প্রকল্পে নিয়মিত পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা। যাতে ছাত্রছাত্রীরা উৎসাহিত হন। সেই জন্য এ বছরই এনএসএস পুরস্কার দিতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এ দিন সেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেই কলেজ স্তরে এনএসএস বাধ্যতামূলক করার আবেদন জানান শিক্ষামন্ত্রী। পুরস্কারটা যদি মিঠে ব্যবস্থা হয়, এই প্রকল্প আবশ্যিক করার জন্য কিছু কড়া বন্দোবস্তের চিন্তাভাবনাও আছে পার্থবাবুদের। এনএসএস না-করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ার মতো কড়া পদক্ষেপ করা যায় কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা যেতে পারে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশেই খুব কম কলেজে এনএসএস চালু আছে। পরিসংখ্যান দিয়ে পার্থবাবু এ দিন বলেন, “সারা দেশে অর্ধেক কলেজেও জাতীয় সেবা প্রকল্প চালু নেই। এটা খুবই দুঃখের।” এর পরেই রাজ্যের কলেজগুলির প্রসঙ্গ তোলেন মন্ত্রী। বলেন, “অধ্যক্ষদের জানানো হবে, তাঁরা যেন এই প্রকল্পকে জীবনের একটা অঙ্গ হিসেবে দেখেন। অধ্যক্ষদের সে-কথা জানাবেন উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার।” এই প্রকল্পে ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়াতে শিক্ষকদেরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান পার্থবাবু। তাঁর বিশ্বাস, শিক্ষক-শিক্ষিকারা উদ্বুদ্ধ করলে ছাত্রছাত্রীরা এই সেবামূলক প্রকল্পে যোগ দিতে অবশ্যই উৎসাহিত হবেন। পড়ুয়াদের উৎসাহিত করার জন্য তাই শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে।
জাতীয় সেবা প্রকল্প সব থেকে ভাল ভাবে রূপায়ণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পুরস্কার পেয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রকল্পের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য এনএসএস কোটায় ছাত্র ভর্তির ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেটা ভেবে দেখার কথা বলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার যদি খেলাধুলোর মতো এনএসএস কোটাতেও ছাত্রছাত্রী ভর্তি শুরু করার অনুমতি দেয়, তা হলে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই আমরা সেই ব্যবস্থা চালু করে দিতে পারি।”
যদিও শিক্ষামন্ত্রী পরে জানান, এই প্রস্তাবে সায় দিলে এনএসএসের জাল শংসাপত্র তৈরি করে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তিনি বলেন, “আসলে এই প্রকল্পের জন্য কিছু চাওয়া ঠিক হবে না। তাতে এর সেবার আদর্শ ক্ষুণ্ণ হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকে যাবে।” তবে যে-সব পড়ুয়া এনএসএস বা এনসিসি প্রকল্প সম্পূর্ণ করবেন, ভবিষ্যতে তাঁদের পুলিশের কাজে ব্যবহার করা যায় কি না, তা ভেবে দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। সে-ক্ষেত্রে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার যে-ব্রত এই প্রকল্পের অন্যতম ভিত্তি, তা-ও পালিত হবে বলে পার্থবাবুর অভিমত। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy