Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

যে কার্ডই হোক, দেখালেই রেশন

নতুন-পুরনো নিয়ে সমস্যা। তাই দাওয়াই দিতে গিয়ে সব এক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী!

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী।

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:৪৩
Share: Save:

নতুন-পুরনো নিয়ে সমস্যা। তাই দাওয়াই দিতে গিয়ে সব এক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী!

কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে ছ’কোটি মানুষকে দু’টাকা কেজি দামে চাল-গম দেওয়ার ঘোষণা ছিল। ভোটের টক্করে এর বাইরেও প্রায় দেড় কোটি মানুষকে ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রকল্প চালু করার মুখে নতুন রেশন কার্ড বিলি শুরু হতেই গণবিক্ষোভে প্রশাসন বেসামাল হয়ে পড়েছে। নানা ভুলে ভরা রেশন কার্ড দেখে বহু গ্রাহকের আশঙ্কা, সস্তার চাল-গম আদৌ মিলবে তো?

পরিস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মাঠে নেমেছেন। সোমবার নবান্নে মমতা ঘোষণা করেছেন, ‘‘নতুন হোক বা পুরনো, রেশন কার্ড থাকলেই সস্তার চাল-গম পাবেন গ্রাহকেরা।’’ এমনকী এপিএল-বিপিএলের বাছ-বিচারও আপাতত স্থগিত থাকছে বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।

ফলে প্রমাদ গুনছে তাঁরই প্রশাসন। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের বাইরে প্রায় দেড় কোটি মানুষকে সস্তায় চাল-গম জোগানোর ভার নেওয়ায় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বাড়তি বোঝা ইতিমধ্যে রাজ্যের ঘাড়ে চেপে বসেছে। উপরন্তু মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, সংখ্যাটা আরও বাড়লেও সমস্যা নেই। যা শুনে খাদ্য দফতরের এক কর্তার শঙ্কিত প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ জন্য বাড়তি অর্থ ও খাদ্যশস্য মজুত রাখতে হবে। মোটেই সহজ কাজ নয়।’’ ওঁর কথায়, ‘‘চাল-গম বিলি এক বার শুরু হয়ে গেলে কিন্তু বন্ধ করা যাবে না। তখন জোগান চালু রাখাটাই সমস্যা।’’

ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি ঘিরে সংঘর্ষে জখম আনসুরা বেগম। সোমবার হাওড়া হাসপাতালে।

মুখ্যমন্ত্রী যদিও এ সবে আমল দিচ্ছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘খাদ্যসাথী চালু হয়েছে। সফল করবই। সব আবেদনকারী এই সুবিধা পাবেন।’’ পাশাপাশি মমতার এ-ও পর্যবেক্ষণ, প্রকল্প ভেস্তে দিতে বিরোধীরা ষড়যন্ত্র করছে। তাঁর হুঁশিয়ারি— ‘‘কিছু জায়গায় সিপিএমের পঞ্চায়েত দুষ্টুমি করছে।’’ ওঁর কথায়, ‘‘সবারই পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কে কংগ্রেস, কে সিপিএম, কে বিজেপি, কে তৃণমূল, তা দেখা ঠিক নয়।’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘গণবণ্টন ব্যবস্থা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট সরকারি আদেশনামা চাই। মুখ্যমন্ত্রীর মুখের কথার গুরুত্ব নেই!’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমরা কি কাল থেকেই বাংলার মানুষকে রেশন দোকানে লাইন দিতে বলতে পারি?’’ বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘রেশন কার্ডের নামে নিচুতলায় ব্যাপক দলতন্ত্র চলছে। নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রীর নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE