Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

তেল চক্রে মামার পরে গারদে ভাগ্নে

সোমবার কাশ্মীর থেকে ট্রেনে কলকাতা স্টেশনে নামতেই গণেশকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাকে জেরা করে একটি লরি, ১২টি অপরিশোধিত খনিজ তেল ভরা ড্রাম এবং আটটি খালি ড্রাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

গণেশ জায়সবাল

গণেশ জায়সবাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও তমলুক শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ১৩:৩০
Share: Save:

হলদিয়ায় তেল চুরির চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃত গণেশ জায়সবালকে মঙ্গলবার তমলুক জেলা আদালতে তোলা হয়। ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম নাগ ধৃতকে ১০ দিনের জন্য সিআইডি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার কাশ্মীর থেকে ট্রেনে কলকাতা স্টেশনে নামতেই গণেশকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাকে জেরা করে একটি লরি, ১২টি অপরিশোধিত খনিজ তেল ভরা ড্রাম এবং আটটি খালি ড্রাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে তেল চুরির ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে কামারদা বাজার এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। সেই মামলায় পরে ধরা পড়ে সঙ্গম জায়সবাল। গণেশ এই সঙ্গমের ভাগ্নে।

সিআইডি সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গায় তোলা ছবিতে গণেশের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দেখা গিয়েছিল। গণেশ নিজেকে বিজেপির নেতা বলেও দাবি করত। এ বিষয়ে হাওড়ার ধূলাগড়িতে দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘বহু লোক আমার সঙ্গে ছবি তোলে। আমার পক্ষে সকলকে চিনে রাখা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তো অনেক মাফিয়া ছবি তোলেন। শুনেছি, ধৃত ব্যক্তি আমাদের দলের পক্ষ থেকে বস্তি সেলটা দেখতেন। খোঁজখবর নিচ্ছি। তেমন হলে তাকে দল থেকে বার করে দেওয়া হবে। আইন তার নিজের পথে চলবে।’’ বিজেপি-যোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে গণেশ বলে, ‘‘আমি নির্দোষ। কোনও দলের সঙ্গেও আমার সম্পর্ক নেই।’’

কী ভাবে তেল চুরি করত আন্তঃরাজ্য তেল চুরি চক্র?

সিআইডি সূত্রের খবর, মূলত পারাদীপ-হলদিয়া-বারাউনি পাইপলাইনকে নিশানা করেছিল দুষ্কৃতীরা। ধানখেতে মাটির নীচে থাকা ইন্ডিয়ান ওয়েলের ওই পাইপলাইন ফুটো করে তাতে চেক ভাল্‌ভ বসিয়ে নিজেদের সুবিধেমতো জায়গায় নতুন পাইপলাইন নিয়ে যেত তারা। সেখানে ড্রামে ভরা হতো তেল। পরে তা ট্রাকে চাপিয়ে পাঠানো হতো বিভিন্ন জায়গায়। চেক ভাল্‌ভ বসাতে বিশেষজ্ঞদেরও সাহায্য নিত দুষ্কৃতীরা।

এ ছাড়া তেল চুরি করা হতো ট্যাঙ্কার থেকেও। পুলিশের খবর, হলদিয়ার তৈল শোধনাগার থেকে পেট্রোল, ডিজেল ভর্তি ট্যাঙ্কার হলদিয়া–মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে যাওয়ার সময় চালক-খালাসিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে দাঁড় করিয়ে দিত তেল চুরি চক্রের লোকজন। নন্দকুমার, তমলুক ও কোলাঘাটের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাঙ্কার দাঁড়ালে তেল বার করে নেওয়া হতো। বেহালার বাসিন্দা গণেশ এই কাজের জন্য ১০০ জনকে দল গড়েছিল।

তদন্তকারীরা জানান, চুরির তেল কলকাতা এবং ভিন্‌ রাজ্যের বিভিন্ন ছোট শহর বা পেট্রোল পাম্পে পৌঁছে যেত। বাজারদরের থেকে অনেক কম দামে তা বিক্রি করে দেওয়া হতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE