জন্ম এবং মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহে চালু হতে চলেছে অনলাইন পদ্ধতি। সারা দেশ জুড়ে এই ব্যবস্থা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পের নাম ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’। এর ফলে জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে হাসপাতাল, পুরসভা বা কর্পোরেশনে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে না। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেই হাতেহাতে মিলবে শংসাপত্র। সর্বত্র সেই মতো পরিকাঠামো তৈরি করা হবে।
এ নিয়ে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ। তিনটি স্তরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রথমে জেলা স্তরের আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গত শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের জেলা পরিকল্পনা ভবনে জেলা ও ব্লক হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্বাস্থ্য দফতরের জেলা আধিকারিক, মহকুমাশাসক, বিডিও, পুরসভার রেজিস্ট্রেশন দফতরের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেন ‘স্টেট ব্যুরো অব হেলথ ইন্টেলিজেন্স’-এর আধিকারিকেরা (এসবিআইএইচ)। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জেলা স্তরের এই আধিকারিকেরাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরে প্রশিক্ষণ দেবেন। দ্বিতীয় স্তরে পঞ্চায়েত প্রধান ও পুরসভার কম্পিউটার জানা কর্মীদের আর তৃতীয় স্তরে বিভিন্ন স্তরের স্বাস্থ্য কর্মীদের (এএনএম, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী) প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মেদিনীপুরে প্রশিক্ষণ দিতে এসবিআইএইচের ডেপুটি ডিরেক্টর তীর্থঙ্কর ঘোষাল বলেন, “দেশ জুড়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধীকরণের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এতে অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য যেমন মিলবে, তেমনই শংসাপত্রও পাবেন আত্মীয়েরা। তারই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ২১ দিনের মধ্যে জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার বিধি রয়েছে। কিন্তু এই কাজের জন্য অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়। শহরের কোনও সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে শিশু জন্মানোর পরে হাসপাতাল থেকে সেই নথি পাঠানো হয় পুরসভা বা কর্পোরেশনে। পরে অভিভাবককে সেখানে গিয়ে আবেদন জানাতে হয়। আবেদন জানানোর কয়েকদিন পর মেলে শংসাপত্র। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকে তো চূড়ান্ত ঝক্কি পোহাতে হয়। শংসাপত্র পেতে দিনের পর দিন ঘুরে বেড়াতে হয়। এতে যেমন সময় নষ্ট হয়, তেমনই অর্থও ব্যয় হয়। আবার সব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতাল থেকে পুরসভা বা পঞ্চায়েতে নথি আসে এমন নয়। সে ক্ষেত্রে হয়রানি আরও বাড়ে। অনলাইন পদ্ধতি চালু হলে সেই ঝক্কি থাকবে না। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেই মিলবে শংসাপত্র। তবে প্রাথমিকভাবে সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে না।
যে সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসে ৬০টি বা তার অধিক শিশু জন্মায় আপাতত সেখানে হবে এই পদ্ধতি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে এমন স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে ১৮টি। কিন্তু যে সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনলাইন চালু হবে না, সেখানে কী হবে? জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনলাইন পদ্ধতি চালু না হলেও গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা তো থাকছেই। সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy