Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নোট বাতিলের অনুদান নিলেন মাত্র ১৩ হাজার

শ্রম দফতরের কর্তাদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, সরকার টাকা নিয়ে বসে থাকলেও জেলায় জেলায় ‘যোগ্য’ কাজহারা মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক মনে করেন, ১৫ হাজার মানুষ যে অনুদান পেয়েছেন সেটাও কম নয়।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ঘোষণা করেছিলেন, নোটবন্দির জেরে কাজ হারানো এ রাজ্যের ৫০ হাজার মানুষকে ৫০ হাজার টাকার এককালীন অনুদান দেবে তাঁর সরকার। সারা দেশের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই এমন সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিল। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার থাকলেও শ্রম দফতরের হিসেব বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার মানুষ সেই আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন। সে বাবদ খরচ হয়েছে‌ ৬৩ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা।

নোটবাতিলের ক্ষতে মলম দিতে তড়িঘড়ি যে প্রকল্প শুরু হয়েছিল, আট মাস পরেও তা বন্ধ করা হচ্ছে না। শ্রম কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কেউ কাজ হারিয়েছেন এই মর্মে আবেদন করলে তা এখনও গ্রহণ করা হবে। কারণ, অর্থ দফতর কাজহারাদের জন্য মোট ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তার মধ্যে ১০০ কোটি ইতিমধ্যেই শ্রম দফতরকে দেওয়া হয়েছে।

শ্রম দফতরের কর্তাদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, সরকার টাকা নিয়ে বসে থাকলেও জেলায় জেলায় ‘যোগ্য’ কাজহারা মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক মনে করেন, ১৫ হাজার মানুষ যে অনুদান পেয়েছেন সেটাও কম নয়। তাঁর কথায়, ‘‘প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন তা নিখুঁত ভাবে খতিয়ে দেখছে। আবেদনকারীরা সত্যিই কাজ হারিয়েছেন দেখেই টাকা দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, আর কিছু দিনের মধ্যেই ৫০ হাজার সংখ্যা পূরণ হয়ে যাবে।’’

শ্রম দফতরের হিসাব অনুযায়ী, বীরভূম, বর্ধমান, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ সোনা, জরি, নির্মাণ শিল্প, বয়ন শিল্প এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজে পশ্চিম ও উত্তর ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে যান। নোটবন্দির পর এমন দু’লক্ষ লোক রাজ্যে ফিরেছেন বলে সরকার দাবি করেছিল। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই ঘোষিত হয়েছিল অনুদান প্রকল্প।

বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর মতে, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে নোট বাতিলের প্রভাব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমান সম্পূর্ণ ভুল। সরকারি তথ্যই প্রমাণ করছে এত লোক কাজ হারাননি। যে সংখ্যা দেখানো হয়েছে তদন্ত হলে দেখা যাবে তার মধ্যেও পার্টির ক্যাডাররাই রয়েছেন।’’ শ্রমমন্ত্রীর পাল্টা জবাব, ‘‘কাজ হারানোর প্রমাণ ছাড়া কাউকে টাকা দেওয়া হয়নি।’’

প্রশ্ন উঠেছে, অনুদানের টাকা কেন দ্রুত বিলি করা গেল না। শ্রম কর্তাদের একাংশ জানান, নভেম্বরের গো়ড়ায় নোট বাতিল হলেও প্রকল্প ঘোষণা হয় ফেব্রুয়ারিতে। ফলে যাঁরা সাময়িক ভাবে কাজ হারিয়েছিলেন, তাঁরা তত দিনে ফিরে গিয়েছেন।
আর অসংগঠিত ক্ষেত্রের অনেকে কাজ হারানোর নথি পেশ করতেই পারছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE