পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লটারি জানুয়ারি থেকে শুরু করছে প্রতিদিনের খেলা। জারি হয়েছে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও। যা নিয়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, শিল্প-কর্মসংস্থানহীন রাজ্যে রোজের লটারি বেকার ও গরিব মানুষকে সর্বস্বান্ত করবে। সমাজের সর্বস্তরে ‘জুয়াড়ি’ মনোবৃত্তি তৈরিতে মদত জোগাবে। যদিও শাসক দলের স্পষ্ট যুক্তি, নতুন কিছু করা হচ্ছে না। ভিন্ রাজ্যের দৈনিক লটারি এখন চালুই রয়েছে। রাজ্যের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। রাজ্য তার নিজস্ব লটারি চালু করলে অন্যায় কোথায়?
বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই অনলাইন ‘সুপারলোটো’র বিরোধিতা করেছিলেন। লটারি-আন্দোলন করে বাংলা বন্ধও ডেকেছিলেন। ক্ষমতায় এসে অবশ্য ২০১৩ সালে অনলাইন লটারি বন্ধ করে দেন তিনি। সেই মমতাই এখন দৈনিক লটারি চালুর অনুমতি দিয়েছেন। যা নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম, কংগ্রেস, বিজেপি।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মেলা, খেলা, উৎসবে কোষাগারের কোটি কোটি টাকা ধ্বংস হচ্ছে বলে বারবারই সরব বিরোধীরা। সেখানে নতুন করে লটারি শুরু করা হচ্ছে জেনে সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘বিরোধী মমতা বলতেন, মদের দোকানের লাইসেন্স দিয়ে, অনলাইন সুপারলোটো দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে উচ্ছন্নে পাঠানো হচ্ছে। এখন বোঝা যাচ্ছে সে সব নাটক ছিল! মেলা, মোচ্ছবের পরে এ বার জুয়া সিন্ডিকেট তৈরি হবে।’’ রাজ্যে শিল্পহীনতার পরিবেশ প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘অমিত মিত্রকে আনা হয়েছিল বিরাট শিল্প আনা হবে ঘোষণা করে। এখন সরকার রাজস্ব আদায় করছে আবগারি লাইসেন্স আর লটারি, জুয়া থেকে।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মেলা-খেলা উৎসবে সরকার চলছিলই। এ বার জুয়া-মদও জুড়ল। চিটফান্ড গিয়ে এ বার দৈনিক লটারিতে গরিবের পকেট কাটার ব্যবস্থা করছে সরকার।’’ তাঁরা এর বিরুদ্ধে পথে নামবেন বলে জানিয়েছেন দিলীপবাবু।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যদি বিদেশ থেকে শিল্প আনতে পারতেন, তা হলে পশ্চিমবঙ্গে জুয়াশিল্পকে মদত দিতেন না। রোজ লটারি শুরু করে আসলে উনি বেকারদের বলছেন, দিনরাত জুয়া খেল। তাদের জুয়া খেলার টাকা দিয়ে সরকারের মেলা, খেলা, যাত্রা, নাটক, সিনেমার পয়সা জোগাড় হবে যে!’’
পথে নামার কথা জানিয়ে বিধানসভায় কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আফিমের নেশার মতো মেলা, খেলা, লটারি, জুয়ায় মানুষকে ভুলিয়ে রাখতে চাইছে এই সরকার!’’ লটারি-প্রতিবাদে পথে নামবে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-ও।
শাসক দলের তরফে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বলেন, ‘‘বিরোধীরা ইতিহাস ভুলে গিয়েছে। সিপিএমের চালু করা অনলাইন লটারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বন্ধ করেন। এখন যখন রাজ্য থেকে লটারির টাকা অন্য রাজ্যে চলে যাত্থে, তখন তা ঠেকাতে হবে। রাজ্যের অর্থনীতির স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy