শেষ পর্যায়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাত এড়ানো গেলে মাস চারেকের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। তার আগে পাকা রাস্তা, বাড়ি নির্মাণ, পানীয় জল এবং ১০০ দিনের কাজে কয়েক হাজার কোটি টাকা গ্রামে ঢালছে পঞ্চায়েত দফতর। পঞ্চায়েতের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে সরকার চাইছে সেই টাকায় জোরদার কাজে মেনে পড়ুক গ্রাম প়ঞ্চায়েতগুলি। পাশাপাশি তুলনামূলক বড় প্রকল্পগুলি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদগুলিকে অবিলম্বে শেষ করতে বলা হয়েছে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, ‘‘বিভিন্ন প্রকল্পে সারা বছরই দফতর কাজ করে। কিন্তু পরীক্ষার আগে যেমন ছাত্রছাত্রীদের বাড়তি পড়াশোনা করতে হয় তেমনই পঞ্চায়েতগুলিকেও ভোটের আগে জোরদার কাজে নামতে হবে।’’ বাড়ি, রাস্তা, জল, ভাতা, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে যাতে সাধারণ মানুষের কোনও অভিযোগ না থাকে তা দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান পঞ্চায়েতমন্ত্রী।
কী কী খাতে সরকার শেষ তিন মাসে টানা নামাচ্ছে?
দফতরের খবর, ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে দেদার ১০০ দিনের কাজ বিলি করছে পঞ্চায়েতগুলি। প্রতি মাসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মজুরি ও সামগ্রী মিলিয়ে তাতে অন্তত ৯০০ কোটি টাকার কাজ হতে পারে। দফতরের এক কর্তা জানান, ২৩ কোটি শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে। কেন্দ্র তা বাড়িয়ে ২৬ কোটি করে দিয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েতগুলি যে ভাবে কাজ বিলি করছে এ বার ২৮ কোটি শ্রমদিবস সৃষ্টি করা গেলেও অবাক হওয়ার নয়। কিন্তু এই টাকা কোথা থেকে আসবে? দফতরের ওই কর্তা জানান, আইনে কাজ চাইলে তা সরকার দিতে বাধ্য। ফলে কেন্দ্রকে টাকা দিতেই হবে।
একইভাবে গ্রামে পাকা রাস্তা তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার ১৩০০ কোটি টাকা হাতে নিয়ে বসে রয়েছে রাজ্য। ১৩০০ কিমি রাস্তা তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই ৬০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আরও ২২০০ কিমি রাস্তার জন্য ১৩০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। গরিব মানুষের পাকা বাড়ি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা খাতেও রাজ্যের হাতে এখন ৯০০ কোটি টাকা রয়েছে। আগামী দু’মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার বাড়ি তৈরির জন্য এই টাকা খরচ করা হবে।
ভোটের দান
• আবাস যোজনা ৯০০.০০
• সড়ক যোজনা ১৩০০.০০
• কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন ১২০০.০০
• রাজ্য অর্থ কমিশন ২০০.০০#
• ১০০ দিনের কাজ ৩.৫ কোটি
কর্মদিবস
#কোটি টাকায়
সরকার কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের ১২০০ কোটি গত সপ্তাহেই পঞ্চায়েতগুলিতে পাঠিয়েছে। এই টাকায় সম্পদসৃষ্টিকারী কালভার্ট, রাস্তা, ছোট সেতু ইত্যাদি কাজ করা যাবে। রাজ্য অর্থ কমিশনের ২০০ কোটিও এর আগে পাঠানো হয়েছে পঞ্চায়েতে। আবার বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকল্পেও ২৫০ কোটি দেওয়া হয়েছে মাস কয়েক আগে।
এ সব শুনে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সবই তো কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা। সেই টাকা পাঠিয়ে এখন কৃতিত্ব নিতে চাইছে সরকার। তাও এত টাকা দু’মাসে খরচের ক্ষমতা পঞ্চায়েতগুলির নেই।’’ পঞ্চায়েতমন্ত্রী তার পাল্টা বলেন, ‘‘এ তো দয়ার দান নয়,অধিকারের টাকা। কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যও টাকা দেয়। সেই কারণে নামও বদলে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy